শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

চিকিৎসার উদ্দেশ্য হল রোগের তীব্র আক্রমণ থেকে তাৎক্ষনিক মুক্তি এবং ভবিষ্যতে দীর্ঘ সময় ধরে রোগের গুরুতর আক্রমণকে প্রতিহত করা। দ্রুত ত্রাণ (ত্রাণদায়ী ওষুধ) এইগুলিকে উদ্ধারকারী ওষুধ বলা হয়। হাঁপানির তীব্র কষ্টদায়ক আক্রমণ থেকে তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়ার জন্য এইগুলির ব্যবহার করা হয়। ব্যায়াম শুরু করার আগে এই ওষুধগুলি সেবন করার পরামর্শ দেন ডাক্তারবাবুরা কারণ সাধারণত ব্যায়াম করার পর হাঁপানির টান শুরু হয়ে যায় (ব্যায়াম-প্ররোচিত হাঁপানি)। ব্যায়ামগুলির উদাহরণ হল দৌড়ানো বা শীতকালীন ক্রীড়া (স্কিইং, আইস স্কেটিং, আইস হকি)। দ্রুত-মুক্তিদায়ী ওষুধগুলি মসৃণ পেশীগুলিকে শিথিল করে দিয়ে সংকুচিত বায়ুচলাচলকারী নলিকে খুলে দেয় যাতে বাতাস চলাচলে কোন বাধা না আসে। হাঁপানির তীব্র এবং কষ্টদায়ক উপসর্গগুলি থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে ত্রাণদায়ী ওষুধগুলির মধ্যে প্রথম পছন্দ হল দ্রুত কার্যকারী বিটা-অ্যাগোনিস্টগুলি। এইগুলি হল শ্বাসের সাথে মুখ ভিতরে টেনে নেওয়ার ওষুধ, যা প্রয়োগ মাত্রই শ্বাস নালীকে দ্রুত শিথিল করে দেয় (ব্রঙ্কোডায়ালেশান)। ডাক্তারবাবুরা যে ওষুধগুলি প্রেসক্রাইব করেন সেগুলি হল অলবিউটেরল, লেভালবিউটেরল এবং পিরবিউটেরল। যখন আপনি এই ত্রাণকারী ওষুধগুলি নিচ্ছেন, তখনও দীর্ঘ সময় ধরে হাঁপানির যে ওষুধগুলি আপনি ব্যবহার করেন সেগুলি বন্ধ করবেন না। যদি আপনাকে সপ্তাহে দুই বারের অধিক এই ত্রাণকারী ওষুধগুলি ব্যবহার করতে হয় তাহলে তা ডাক্তারবাবুকে জানান জরুরী। দীর্ঘমেয়াদী নিয়ন্ত্রণ (নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ) ইনহেলড কর্টিকোস্টেরয়েডস হাঁপানির দীর্ঘ মেয়াদি চিকিৎসার জন্য এইগুলি প্রথম পছন্দ। এর ব্যবহারে শ্বাস নালীর প্রদাহ কমে, ফলে শ্বাস নালীর ফোলাও কমে যায় (যেমন ফ্লুটিকাজোন, বাডেসোনাইড, মোমেটাজোন, বিক্লোমিথাজোন এবং প্রেডনিজোলন)। ইনহেলড কর্টিকোস্টেরয়েডস এবং দীর্ঘ সময় কার্যকরী বিটা-অ্যাগনিস্টস  দীর্ঘ সময় কার্যকরী বিটা-অ্যাগনিস্টস (এল-এ-বি-এ) মসৃণ পেশীগুলিকে শিথিল করে রাখে এবং শ্বাস নালীকে  খুলে রাখে। রাত্রি-কালীন হাঁপানি এবং ব্যায়াম প্ররোচিত হাঁপানির চিকিৎসার জন্য কখনও কখনও এই ওষুধগুলি ব্যবহার করা হয়। অবশ্য হাঁপানির দীর্ঘ মেয়াদি চিকিৎসার জন্য ডাক্তারবাবুরা এল-এ-বি-এর সাথে সব সময়েই ইনহেলড স্টেরয়েডস দিয়ে থাকেন। এই সমন্বয় এছাড়াও ব্যবহার করা হয় যখন দ্রুত কার্যকারী বিটা-অ্যাগোনিস্ট এবং ইনহেলড স্টেরয়েডস একটি তীব্র আক্রমণের উপসর্গ উপশম করতে ব্যর্থ হয়। এই সমন্বয়ের উদাহরণ হল ফ্লুটিকাজোন ও সালমেটেরল, ফ্লুটিকাজোন ও ভিলানটেরল এবং বাডেজোনাইড ও ফরমোটেরল। দীর্ঘকাল-কার্যকারী এন্টিকোলিনারজিকস এগুলি শ্বাসের সাথে ভিতরে টেনে নেওয়ার ওষুধ। এগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণকারী ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হয় যাতে শ্বাস নালীর মসৃণ পেশীগুলি সব সময়ই শিথিল থাকে। এদের মধ্যে রয়েছে টিওট্রোপিয়াম এবং ইপ্রাট্রোপিয়াম। ওষুধের কার্যকরী ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ডাক্তারবাবুরা অনেক সময় দুইটি এন্টিকোলিনারজিক ওষুধের সমন্বয় ব্যবহার করেন। মিথাইলজ্যানথিনস মিথাইলজ্যানথিনগুলি, যেমন থিয়োফাইলিন, রাত্রি-কালীন হাঁপানির প্রতিরোধ করতে ব্যবহার করা হয়। লিউকোট্রাইন রিসেপটার এন্টাগনিস্ট অথবা লিউকোট্রাইন মডিফায়ার্স এই ওষুধগুলি খেলে শ্বাস নালীতে ব্রঙ্কোস্প্যাজম, প্রদাহ এবং ফোলা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এদের মধ্যে আছে মন্টেলুকাস্ট এবং জাফিরলুকাস্ট।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ