শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

পিঠে ব্যথার চিকিৎসাকে সাধারণতঃ তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। পিঠের ব্যথার সাথে হাজির ব্যথা এবং উপসর্গগুলির প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে ডাক্তার চিকিৎসা স্থির করেন।  ওষুধহীন চিকিৎসা সাধারণভাবে তীব্র এবং অনির্দিষ্ট পিঠের ব্যথা বিশ্রাম এবং স্ব-পরিচর্যাতেই ভাল হতে থাকে। পিঠে ব্যথার কিছু স্ব-পরিচর্যা পদ্ধতির মধ্যে নীচে উল্লিখিতগুলি আছেঃ  গরম সেঁক এবং ম্যাসাজ (অঙ্গ সংবাহন) এটা রক্তপ্রবাহ বাড়ায় এবং পেশীর শক্তভাব শিথিল করে।   ফিজিওথেরাপি ব্যায়াম এবং ট্র্যাকশন এগুলি ফিজিওথেরাপিস্টদের তত্ত্বাবধানে করা উচিত। এগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যথা কমানোয় সাহায্য করে।   বৈকল্পিক থেরাপি এগুলির মধ্যে আছেঃ যোগ (ব্যায়াম), যার সাথে জড়িত বিভিন্ন ধরণের প্রসারণ (শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ ছড়ানো) ব্যায়াম এবং অবস্থান যা পেশীগুলির শক্তভাব শিথিল করে। অ্যাকুপাংচার চিকিৎসায় আছে ব্যথা উপশম করার জন্য শরীরের নির্দিষ্ট বিন্দুগুলিতে সূঁচ ফোটানোর ব্যবহার।  কায়রোপ্র্যাক্টিক চিকিৎসায় দরকার হয় মেরুদণ্ডের মধ্যে অবস্থিত জোড় বা গাঁটগুলিতে শক্তভাব দূর করতে এবং নমনীয়তা নিয়ে আসার জন্য মেরুদণ্ডীয় অঙ্গগুলির উপর নিয়ন্ত্রিত শক্তিপ্রয়োগ দ্বারা মেরুদণ্ডে দক্ষতাসহকারে হস্তচালনা কৌশল।   মন শান্ত করার কৌশল, যেমন ধ্যান, বায়োফিডব্যাক, এবং আচরণে কিছু পরিবর্তন করার কৌশল, ব্যথা উপশম করতেও সাহায্য করে।  মেডিক্যাল চিকিৎসা দীর্ঘস্থায়ী পিঠের ব্যথা সামলানোয় ওষুধ একটা প্রধান ভূমিকা পালন করে এবং অপরিহার্য হয়ে ওঠে যখন ওষুধহীন চিকিৎসার ব্যবস্থাগুলি ব্যথা উপশম করতে ব্যর্থ হয়। প্রচলিতভাবে বিধান দেওয়া ওষুধগুলির মধ্যে আছেঃ     প্যারাসিটামল অথবা অ্যাসিট্যামাইনোফেন এই ওষুধটা সাধারণতঃ পিঠের ব্যথার জন্য বিধান দেওয়া প্রথম ওষুধ। এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম থাকে।   নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটোরি ড্রাগস (এনএসএআইডিএস): এগুলি ব্যথা উপশমকারী এবং এর মধ্যে আছে আইবুপ্রোফেন এবং নেপ্রক্সেন। যখন প্যারাসিটামল ব্যথা উপশম করতে পারেনা তখন এগুলির বিধান দেওয়া হয়। ব্যথা উপশমকারী ওষুধগুলি (পেইনকিলার্স) শরীরের কোনও অংশে লাগানোর ক্রিম, মলম এবং স্প্রে হিসাবেও লভ্য যেগুলি ব্যথার তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে।    পেশী শিথিলকারী ডাক্তাররা পেশীগুলির শক্তভাব কমাবার জন্য এনএসএআইডিএস-এর সাথে সাইক্লোবেঞ্জাপ্রিন এবং মেথোকার্বামল-এর মত পেশী শিথিলকারী ওষুধের পরামর্শ দেন।    চেতনানাশক মাদকের মত ওষুধ   ট্রামাডোল এবং মরফিন তীব্র ব্যথা থেকে মুক্তি দেবার জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলি একটা অল্প সময় (2-3 সপ্তাহ) ধরে ব্যবহারের জন্য বিধান দেওয়া হয়। ঘুম ঘুম ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য (পায়খানা শক্ত হওয়া), মুখের শুকনোভাব, ধীরে শ্বাস নেওয়া, এবং ত্বকের চুলকানির মত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে, এগুলি দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়না।   অবসাদরোধী ওষুধ   প্রধানতঃ ক্রনিক পিঠের ব্যথায় এবং তাঁদের জন্য যাঁরা দীর্ঘ-স্থায়ী ব্যথার কারণে অবসাদগ্রস্ত থাকেন, এগুলি ব্যবহার করা হয়। এগুলির মধ্যে আছে অ্যামিট্রিপটিলিন, ডুলক্সিটিন, এবং ইমিপ্র্যামাইন। যেহেতু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি  (উদাহরণস্বরূপ, ঝাপসা দৃষ্টি, ওজন বাড়া, এবং ঘুম ঘুম ভাব) খুব বেশি দেখা যায়, এই ওষুধগুলি কঠোর মেডিক্যাল তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত।         স্টেরয়েডস   কর্টিকোস্টেরয়েডস, যেমন প্রেডনিসোলোন, পায়ের নীচের দিকে বিকীর্ণ হওয়া ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। এগুলি আঘাতের স্থানে প্রদাহ (জ্বলন) এবং ফোলাভাব যেগুলি পিঠে ব্যথার কারণ ঘটায়, সেগুলিও কমায়।    খিঁচুনি বা তড়কা-প্রতিরোধী সাম্প্রতিক গবেষণাগুলি দেখিয়েছে যে পেইনকিলারের সাথে মৃগীরোগসম্পর্কিত-প্রতিরোধী ওষুধগুলি স্নায়ু-ব্যথার উপশমে কার্যকর, বিশেষতঃ ক্রনিক পিঠের ব্যথায়। কার্বাম্যাজুপাইন, গ্যাবাপেন্টিন, এবং ভ্যালপ্রোয়িক অ্যাসিড হচ্ছে প্রচলিতভাবে ব্যবহৃত মৃগীরোগ-প্রতিরোধী ওষুধ। বিভ্রান্তি, গ্যাস্ট্রিকের (পেটের) গোলমাল, এবং মাথাধরা হল তড়কা-প্রতিরোধী ওষুধগুলির দ্বারা ঘটিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।   

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ