সেলিয়াক রোগের লক্ষণ প্রায়ই বদলাতে থাকে; আর সেই কারণে মাত্র 20 শতাংশ রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পরে। সেলিয়াক রোগ হয়েছে কিনা তা জানার জন্য পরিবারের চিকিৎসাগত ইতিহাস, রোগীর চিকিৎসাগত ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করা হয়, সেই সঙ্গে রোগীর খাদ্য তালিকা দেখা হয়, এছাড়াও, রক্ত পরীক্ষা এবং বায়োপসি করেও দেখা হতে পারে। দুরকমের রক্ত পরীক্ষা করা হয়ঃ প্রথমটি হলো সেরোলজিকাল টেস্ট যার ফলে জানা যায় গ্লুটেনকে বিনষ্ট করার জন্য শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি আছে কি না। আর দ্বিতীয় হলো হিউম্যান লিউকোসাইট অ্যান্টিজেন (এইচএলএ)-এর জন্য জেনেটিক টেস্ট। ক্ষুদান্ত্রে যেসব ছোটো ছোটো শোষক নল থাকে তার পরিকাঠামোগত কোনও ক্ষতি হয়েছে কিনা তা জানার জন্য অন্ত্রের বায়োপসি করা হয়। তবে, এইসব পরীক্ষায় সঠিক এবং ঠিকমতো ফলাফল যাতে আসে তার জন্য এই সময় গ্লুটেন জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে বলা হয়। এই ধরণের অসুখে পরবর্তীকালে শারীরিক পরীক্ষা বছরে একবার এবং তা আজীবন চালিয়ে যেতে হয়। এই রোগ থেকে একেবারে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো গ্লুটেন নেই এমন খাবার খেতে হবে, এমনকি গ্লুটেনের উপস্থিতি আছে এমন কোনও ওষুধ, সাপ্লিমেন্ট বা সম্পূরক খাদ্য এবং পানীয় গ্রহণ করা যাবে না। একজন ভালো পুষ্টিবিদের পরামর্শে খাদ্যতালিকায় গ্লুটেনমুক্ত খাবার যেমন নিশ্চিত করতে হবে, তেমনই এটাও দেখতে হবে শরীরে যেন প্রয়োজনীয় প্রোটিনের ঘাটতি না হয়। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়া অন্ত্র সেরে উঠতে শুরু করে, ক্ষুদ্রান্তে অবস্থিত শোষক নলও আবার তৈরি হয়ে যায় কয়েক মাসের মধ্যে। অন্ত্র পুনরায় আগের মতো হয়ে এলে প্রদাহ দূর হয় এবং উপসর্গগুলিও আর দেখা দেয় না। খাবার ও পানীয় গ্রহণের সময় শতর্ক থাকতে হবে। প্যাকেটের গায়ে দেখে নিতে হয় গ্লুটেনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির ব্যাপারটি। সম্পূর্ণ নিশ্চিত হয়ে তবেই তা কিনতে হয়। স্টার্চযুক্ত বা গ্লুটেনবিহীন কিছু খাদ্য, শস্য: ভুট্টা, নটেশাক, পেশাই করা ভুট্টা বা কর্নমিল, চাল,বাজরা, সাবু দানা ও অ্যারারুট। তাজা মাংস, মাছ, পোল্ট্রি জাতীয় খাবার, বেশিরভাগ দুগ্ধজাতীয় খাদ্য ও শাকসব্জি।