শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

হার্ট অ্যাটাক এক নীরব ঘাতক। যে কেউ যেকোনো সময় এর শিকার হতে পারেন। শরীরচর্চা না করা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ ও জীবনযাপনে অনিয়ম হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। এর লক্ষণগুলো জানা থাকলে একটি জীবন হয়তো বাঁচিয়ে দেওয়া সম্ভব। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে হার্ট অ্যাটাকের কিছু লক্ষণের কথা তুলে ধরেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। ভারতের গুরগাঁওয়ের কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অনিল বনশাল হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাব্য কিছু লক্ষণের কথা জানিয়েছেন। হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কয়েকটি লক্ষণের মধ্যে রয়েছে বুক ভার হয়ে আসা, পেটের ওপরের অংশে অসহনীয় ব্যথা অনুভব করা, বাঁ হাত ব্যথা, চোয়াল ও ঘাড় ব্যথা এবং শ্বাসকষ্ট। এই লক্ষণগুলো টের পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিকটস্থ কোনো হাসপাতালে যাওয়া এবং ইসিজি করা প্রয়োজন। প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায়, হার্ট অ্যাটাকের এসব লক্ষণ দেখা যাওয়ার পরও বিষয়টিকে এড়িয়ে যান অনেকে। কিন্তু হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়াটা খুব জরুরি। হার্ট অ্যাটাকের অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা ও ঘাম হওয়া। বুকে প্রচণ্ড চাপও অনুভব করতে পারেন আপনি। মনে হতে পারে, বুক যেন ভেঙে আসছে। হার্ট অ্যাটাক হলে পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় বুকব্যথার লক্ষণ দেখা দেয়। অন্যদিকে, নারীদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, চোয়াল ও মেরুদণ্ডে ব্যথা হয়। হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষণ

হার্ট অ্যাটাকের ভয় পান না, এমন মানুষ বোধহয় জগত সংসারে নেই। এই ঘাতক ব্যধি এই আধুনিক চিকিৎসার যুগেও বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ। প্রতিবছর পৃথিবীর বুকে রোগের কারণে যেসব মানুষ মারা যান, তাদের একটা বড় অংশের মৃত্যুর কারণ এই হার্ট অ্যাটাক। এবং তাদের মাঝে অনেকেই স্রেফ এই কারণে মৃত্যুবরণ করেন যে হার্ট অ্যাটাককালীন সময়ে তিনি ছিলেন একা। সঠিক সময়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেই মানুষটিকে বরণ করে নিতে হয় মৃত্যু। জীবনের প্রয়োজনে আমাদের অনেককেই আজকাল একা থাকতে হয়। কিংবা ধরুন কোথাও বেড়াতে গিয়েছেন, কিংবা বাসায় কেউ নেই এই মুহূর্তে, কিংবা নিজের অফিস কক্ষে একা আছেন, অথবা বাথরুমে গিয়েছেন... এমন কত ছোট খাট মুহূর্তে আমরা একলা থাকি, তাই না? অসুখ তো আর সময় বুঝে আসবে না, ধরুন সেই একলা থাকার মুহূর্তেই হলো আপনার হার্ট অ্যাটাক? ইউরোপিয়ানদের তুলনায় ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তিন গুণ বেশি। ভারতীয় উপমহাদেশের অধিবাসীদের মধ্যে তরুণরা অল্প বয়সেই হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে পারে। আবার এটাও সত্য নয় যে, যারা মোটা তাদেরই হৃদরোগ হবে। আপনারা যদি হৃদরোগ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন যেখানে বাইপাস হয়েছে এমন রোগীদের রাখা আছে তাহলে দেখবেন যে, সেখানে মোটা মানুষের সংখ্যা খুবই কম। বরং দেখা যাবে যে তাদের বেশিরভাগই হালকা-পাতলা গড়নের মানুষ। সুতরাং, হালকা-পাতলা, চিকন স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া মানে এই নয় যে, আপনি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে পরিত্রাণ পেয়েছেন। বিপদের কথা কেউ বলতে পারে না, তাই আসুন জেনে রাখি হার্ট অ্যাটাক করলে কি করবেন। কিংবা কি করলে বাড়তি কয়েক মুহূর্ত জীবনের জন্য লড়াই করতে পারবেন। হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণগুলো- — বুকে অস্বস্তি কিংবা ব্যথা। — শরীরের ওপরের দিকে অস্বস্তি বা ব্যথা, বিশেষ করে হাতে, পিঠে ও চোয়ালে বা পেটে। — একটুতে হাঁফিয়ে ওঠা, হঠাত্ ঘাম, বমি বমি ভাব, মাথা হালকা লাগা বা ঘোরা। পুরুষের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা বা অস্বস্তিটা হার্ট অ্যাটাকের প্রধান লক্ষণ। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে মাত্র ৩০ শতাংশ বুকে ব্যথা বোধ করে। অনেক সময়ই মেয়েদের লক্ষণগুলো এমন যে, সেগুলো উপেক্ষিত হয়ে যায়। অনেকেই মনে করেন সাধারণ শরীর খারাপ লাগছে।