শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

বুকে ব্যথা: হার্ট অ্যাটাকের প্রথম ও প্রধান লক্ষণ হয় বুকে ব্যথা। সাধারণত বুকের মাঝখান থেকে প্রচণ্ড চাপ ব্যথা অনুভূত হয়। আস্তে আস্তে সেই ব্যথা চোয়ালে অথবা বাম কাঁধ ও বাহুতে ছড়িয়ে পড়ে থাকে। এই রকম ব্যথা দেখা দিলে অব্যশই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শ্বাস কষ্ট ও দম ফুরিয়ে যাওয়া: যদি আপনার অ্যাজমা বা অন্য কোনো সমস্যা না থাকে এবং হঠাৎ করে শ্বাস কষ্ট সমস্যা দেখা দেয় মূলত হৃদরোগ থেকে ফুসফুসে পানি জমাসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে ঠাণ্ডা ছাড়াও শ্বাস কষ্ট এর সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। অল্পতেই দম ফুরিয়ে যাওয়া, মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়াও ভবিষ্যত হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। ঘাম হওয়া: অতিরিক্ত ঘাম হওয়া হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ। বিশেষ করে ডায়াবেটিকস রোগীর ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা ছাড়া অতিরিক্ত ঘাম, বুক ধড়ফড়, হঠাৎ শরীর খারাপ লাগা শুরু হলে অব্যশই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কাশি: আপনার যদি দীর্ঘদিন কাশির সমস্যা থাকে, এবং তার সাথে সাদা বা গোলাপি কফ বের হয়। তবে বুঝতে হবে আপনার হার্ট ঠিক মতো কাজ করছে না। ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তবে হ্যাঁ কাশি সবসময় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ নাও হতে পারে। কফের সাথে নিয়মিত রক্ত বের হলে এটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া: যদি কাজের মধ্যেই আপনি প্রায়ই হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যান, তাহলে বুঝবেন হার্টের সমস্যা রয়েছে। এটি যদি কোনো দুশ্চিন্তার কারণে না হয়ে থাকে তবে দ্রুত কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অনিয়মিত পালস রেট: আপনি যদি অনেক বেশি নার্ভাস থাকেন বা কোথাও থেকে দৌড়ে আসেন আপনার পালস রেট উঠা নামা করতে পারে। তবে এটি যখন কোন কারণ ছাড়াই উঠা নামা করে সেটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নিয়মিতভাবে যদি এই সমস্যা দেখা দেয় তবে অতিসত্ত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মাথা ব্যথা: যখনই প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হয়, আমরা ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু জানেন কি, হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ হল প্রতিদিনকার প্রচন্ড মাথা ব্যথা। বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা ও ফুলে যাওয়া: আপনার বিভিন্ন অঙ্গে বিশেষ করে হাত-পায়ের গিঁট ব্যথা ও ফুলে যাওয়া সরাসরি হার্ট অ্যাটাক বা হার্টের সমস্যার সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। তবে দীর্ঘদিন হলে হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। শরীরের অভ্যন্তরে পানি চলে আসার করণে শরীরের পানি চলে আসে , যার কারণে হাত-পায়ের গিঁট ফুলে যায়। বিশেষত অনেকক্ষণ কোথাও বসে থাকলে পায়ে পানি চলে আসে। নিয়মিত এটি ঘটলে অব্যশই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। হার্ট অ্যাটাকের আগে আই লক্ষণগুলো আপনার দেখা দিতে পারে। যদি এই লক্ষণগুলো আপনার ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। বিশেষ করে ডায়াবেটিকস বা উচ্চ রক্তচাপ রোগীরা উপরোক্ত কোনো কারণকেই অবহেলা করবেন না। উপরোক্ত যেকোনো একটি কারণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

হার্ট অ্যাটাকের ভয় পান না, এমন মানুষ বোধহয় জগত সংসারে নেই। এই ঘাতক ব্যধি এই আধুনিক চিকিৎসার যুগেও বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ। প্রতিবছর পৃথিবীর বুকে রোগের কারণে যেসব মানুষ মারা যান, তাদের একটা বড় অংশের মৃত্যুর কারণ এই হার্ট অ্যাটাক। এবং তাদের মাঝে অনেকেই স্রেফ এই কারণে মৃত্যুবরণ করেন যে হার্ট অ্যাটাককালীন সময়ে তিনি ছিলেন একা। সঠিক সময়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেই মানুষটিকে বরণ করে নিতে হয় মৃত্যু। জীবনের প্রয়োজনে আমাদের অনেককেই আজকাল একা থাকতে হয়। কিংবা ধরুন কোথাও বেড়াতে গিয়েছেন, কিংবা বাসায় কেউ নেই এই মুহূর্তে, কিংবা নিজের অফিস কক্ষে একা আছেন, অথবা বাথরুমে গিয়েছেন... এমন কত ছোট খাট মুহূর্তে আমরা একলা থাকি, তাই না? অসুখ তো আর সময় বুঝে আসবে না, ধরুন সেই একলা থাকার মুহূর্তেই হলো আপনার হার্ট অ্যাটাক? ইউরোপিয়ানদের তুলনায় ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তিন গুণ বেশি। ভারতীয় উপমহাদেশের অধিবাসীদের মধ্যে তরুণরা অল্প বয়সেই হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে পারে। আবার এটাও সত্য নয় যে, যারা মোটা তাদেরই হৃদরোগ হবে। আপনারা যদি হৃদরোগ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন যেখানে বাইপাস হয়েছে এমন রোগীদের রাখা আছে তাহলে দেখবেন যে, সেখানে মোটা মানুষের সংখ্যা খুবই কম। বরং দেখা যাবে যে তাদের বেশিরভাগই হালকা-পাতলা গড়নের মানুষ। সুতরাং, হালকা-পাতলা, চিকন স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া মানে এই নয় যে, আপনি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে পরিত্রাণ পেয়েছেন। বিপদের কথা কেউ বলতে পারে না, তাই আসুন জেনে রাখি হার্ট অ্যাটাক করলে কি করবেন। কিংবা কি করলে বাড়তি কয়েক মুহূর্ত জীবনের জন্য লড়াই করতে পারবেন। হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণগুলো- — বুকে অস্বস্তি কিংবা ব্যথা। — শরীরের ওপরের দিকে অস্বস্তি বা ব্যথা, বিশেষ করে হাতে, পিঠে ও চোয়ালে বা পেটে। — একটুতে হাঁফিয়ে ওঠা, হঠাত্ ঘাম, বমি বমি ভাব, মাথা হালকা লাগা বা ঘোরা। পুরুষের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা বা অস্বস্তিটা হার্ট অ্যাটাকের প্রধান লক্ষণ। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে মাত্র ৩০ শতাংশ বুকে ব্যথা বোধ করে। অনেক সময়ই মেয়েদের লক্ষণগুলো এমন যে, সেগুলো উপেক্ষিত হয়ে যায়। অনেকেই মনে করেন সাধারণ শরীর খারাপ লাগছে।