শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

আয়ুর্বেদিক বিজ্ঞানে ত্রিফলা নামে পরিচিত তিনটি ফলের মধ্যে একটি হচ্ছে  হরতকি। এর নানাবিধ গুণ আছে। এটি স্বাদে তিক্ত বা তিতা একটি ফল। এতে ট্যানিন, অ্যামাইনো এসিড, ফ্রুকটোজ ও বিটা সাইটোস্টেবল সমৃদ্ধ উপাদান রয়েছে।  হরতকি দেহের অন্ত্র পরিষ্কার করে এবং একই সঙ্গে দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে।  এটা রক্তচাপ ও অন্ত্রের খিঁচুনি কমায়। হৃদপিণ্ড ও অন্ত্রের অনিয়ম দূর করে।  এটি পরজীবীনাশক, পরিবর্তনসাধক, অন্ত্রের খিঁচুনি রোধক এবং স্নায়ুবিক শক্তিবর্ধক। এছাড়াও হরতকি কোষ্ঠকাঠিন্য, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, অবসাদ এবং অধিক ওজনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। নিচে হরতকির আরো কিছু উপকারিতা তুলে ধরা হলঃ  ১. হরতকিতে অ্যানথ্রাইকুইনোন থাকার কারণে রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হরিতকি। অ্যালার্জি দূর করতে হরতকি বিশেষ উপকারী। ২. হরতকি ফুটিয়ে সেই পানি পান করলে অ্যালার্জি কমে যায় ৷ ৩. হরতকির গুঁড়া নারিকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে সেই তেল ফুটিয়ে মাথায় লাগালে চুল ভালো হয়, সৌন্দর্য বাড়ে। ৪. হরতকির গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে। ৫. গলা ব্যথা বা মুখ ফুলে গেলে হরিতকি পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করলে আরাম পাওয়া যায় । ৬. দাঁতে ব্যথা হলে হরতকি গুঁড়া লাগান, দাঁত ব্যথা সের যাবে। ৭. রাতে শোয়ার আগে অল্প বিট লবণের সঙ্গে ২ গ্রাম লবঙ্গ বা দারুচিনির সঙ্গে হরিতকির গুঁড়া মিশিয়ে খান। পরদিন সকালবেলা পায়খানা নরম হয়ে পেট পরিষ্কার হবে।  ৮. হরতকি ফল হৃদরোগ, বদহজম, আমাশয়, জন্ডিস এবং ঋতুস্রাবের ব্যথায় খাওয়ানো হয়। ৯. ফলের রস জ্বর, কাশি, হাঁপানি, পেট ফাঁপা, ঢেকুর উঠা, বর্ধিত যকৃত ও প্লীহা, বাতরোগ ও মূত্রনালীর অসুখেও বিশেষ উপকারী। ১০. কাঁচা ফল রেচক হিসেবে কাজ করে। ১১. আধুনিক ভেষজ চিকৎসকরা ফুঁসফুঁস ও শ্বাসনালীঘটিত রোগে হরতকি বহুল ব্যবহার করে থাকেন। কাশি ও শ্বাসকষ্টে হরতকি খুবই উপকারি। ১২. এছাড়া, ঘন ঘন পানির তৃষ্ণা কিংবা বমি বমি ভাব কাটাতেও হরতকি ব্যবহৃত হয়। ১৩. ত্রিফলা অর্থাৎ আমলকি, হরিতকি ও বহেরা এর প্রতিটির সমপরিমাণ গুঁড়ার শরবত কোলেস্টেরল কমাবার অর্থাৎ প্রেসার বা রক্তচাপ কমাবার মহৌষধ। এক ওষুধ গবেষক দলের মতে, আধুনিক যে কোন এ্যালোপ্যাথিক ঔষধের তুলনায় ত্রিফলা কোলেস্টেরল কমাবার ক্ষেত্রে অনেক বেশি ফলপ্রসূ। ১৪. অর্শ রোগে হরতকি চূর্ণ তিন থেকে পাঁচ গ্রাম পরিমাণ ঘোলের সঙ্গে একটু লবণ মিশিয়ে খেলে সেরে যাবে। ১৫. রক্তার্শে আখের গুড়ের সঙ্গে হরতকি গুঁড়া মিশিয়ে খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই সুফল পাওয়া যায়। ১৬. চোখের রোগের ক্ষেত্রে হরতকি ছেঁচে পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে। ১৭. পিত্ত বেদনায় সামান্য গাওয়া ঘিয়ের সঙ্গে হরতকি গুঁড়া সেবন করলে উপকার  হয়। ১৭. গলার স্বর বসে গেলে মুথা ও হরতকি চূর্ণ মধুর সঙ্গে বেটে অথবা যোয়ানের সঙ্গে পান করলে ভাঙা স্বর স্বাভাবিক হয়।  

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ