শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

সম্প্রতি আমেরিকান এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেকোন ঋতুতে শরীর সুস্থ রাখতে পেয়ারা দারুণ কার্যকরী। শরীরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ সক্রিয় রাখার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাকৃতিক উপাদান। পেয়ারায় রয়েছে ভিটামিন সি, লাইকোপেন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট; যা মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত সুস্থ এবং সুন্দর রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন একটি করে পেয়ারা খেলে যেসব উপকার পাওয়া যাবে- ১. অন্যান্য ফল ও শাকসবজির মতো পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি  উপাদান রয়েছে; যা শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। এতে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকে। আপেল বা কমলার চেয়েও এতে কম পরিমাণে প্রাকৃতিক সুগার থাকে।  ২. পেয়ারাতে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত পেয়ারা খেলে টু টাইপ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়। ৩. পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে খনিজ থাকে। এতে থাকা কপার থাইরয়েডের জন্য দারুণ উপকারী। পেয়ারা হরমোনের বৃদ্ধি ঘটায় এবং বিপাকে সাহায্য করে। ৪. চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন এ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে।  ৫. পেয়ারাতে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের সেল প্রতিরোধ করে। এতে কমলার চেয়েও বেশি ভিটামিন সি থাকে। নিয়মিত এই ফলটি খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।  ৬. পেয়ারাতে থাকা ভিটামিন বি এবং ভিটামিন বি সিক্স মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে কার্যকারিতা ঠিক রাখে।  ৭. রক্তে সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে পেয়ারা। ফলে উচ্চ রক্তচাপ কমে। সেই সঙ্গে পেয়ারা খারাপ কোলস্টেরলের মাত্রাও কমায়।  ৮. পেয়ারা কোষ্টকাঠিন্য কমাতে এবং ত্বক ভাল রাখতেও সাহায্য করে। ৯. পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সাথে যুদ্ধ করার শক্তি প্রদান করে। ১০. পেয়ারাতে লাইকোপিন, ভিটামিন সি, কোয়ারসেটিন এর মত অনেকগুলো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা শরীরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে। এটি প্রোসটেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। ১১. ১৯৯৩ সালে “Journal of Human Hypertension” এ প্রকাশিত হয় যে নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্ত চাপ ও রক্তের লিপিড কমে। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম, ভিটামিন সি রয়েছে। পটাশিয়াম নিয়মিত হৃদস্পন্দনের এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ভাবে লাইকোপিন সমৃদ্ধ গোলাপি পেয়ারা খেলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। ১২. চাইনিজ চিকিৎসা শাস্ত্ররে অনেক বছর ধরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পেয়ারা ব্যবহার হয়ে আসছে। ১৯৮৩ সালে American Journal of Chinese Medicine প্রকাশ করেন যে, পেয়ারার রসে থাকা উপাদান ডায়াবেটিস মেলাইটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পেয়ারা পাতাও বেশ কার্যকর। কচি পেয়ারা পাতা শুকিয়ে মিহি গুঁড়ো করে ১ কাপ গরম পানিতে ১ চা চামচ দিয়ে ৫ মিনিট ঢেকে রেখে তারপর ছেঁকে নিয়ে পান করতে পারেন প্রতিদিন। ১৩. বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত সমস্যা যেমন ব্রংকাইটিস সারিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখে পেয়ারা। উচ্চ পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন সি থাকায় এটি শ্লেষ্মা কমিয়ে দেয়। তবে কাঁচা পেয়ারা ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতে কার্যকর। ১৪. পেয়ারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ১৫. ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পেয়ারা রাখুন। কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন এ এর ভাল উৎস। ১৬. অনেক নারীরই মাসিককালিন পেট ব্যাথা হয়।এ সময় অনেকেই ব্যাথার ঔষধ খেয়ে থাকেন। কিন্তু এ সময় পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা রস খেলে মাসিককালিন ব্যাথা থেকে অধিকতর দ্রুত উপসম পাওয়া যায়।