শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

কর্মীকে কাজ করার উত্সাহদান প্রক্রিয়াকে প্রেষণা বা মোটিভেশনাল বলে। প্রেষণা হল এমন এক দীর্ঘস্থায়ী প্রবণতা যা ব্যক্তিকে উদ্দেশ্যমুখী আচরণ সম্পাদনে উদ্বুদ্ধ করে।  প্রেষণার দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।  উঃ- ১) প্রেষণা হল একটি মানসিক প্রক্রিয়া। ২) প্রেষণা ব্যক্তিকে উদ্দেশ্যমুখী আচরণ সম্পাদনে উদ্বুদ্ধ করে।  প্রেষণাকে কোনো ব্যক্তির চালিকা শক্তি বলা হয়। নিচে এর গুরুত্বের উপর একটা কাহিনি তুলে ধরলাম। একবার একটা ফ্যামিলিগত সমস্যার কারণে পড়াশুনার অবস্থা মোটামুটি খারাপের দিকে যেতে লাগল। সামনে ফাইনাল পরীক্ষা। আগে ১০০ তে ৯৯ পেলে তখন ৮০ পাচ্ছি। হয়ত এ মানটা আরো কমে যেয়ে ‘০’ হতে পারত। একজন স্যার বাসায় আসলেন। মাথায় হাত রেখে শুধু বললেন ‘আমি জানি, তুই পারবি’। আমার কি হলো আমি জানিনা। এই একটা লাইন শুনে ফাইনালে একটা ভালো রেজাল্ট হয়ে গেল। এডমিশন টেস্টে সবাই একে একে চান্স পেয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যাচ্ছে। আমি তখন সারা বাংলাদেশ ঘুরছি পরীক্ষা দেয়ার জন্য। কোথাও চান্স পাচ্ছিনা। চান্স না পাওয়াটা স্বাভাবিক ছিল আমার জন্য। ফ্যামিলির চাপে ‘কী নিয়ে পড়তে হবে, লাইফে কী হব’ এটা যদি চেইঞ্জ করে ফেলতে হয় আর সেই চেইঞ্জ করা ডিসিশনের সাথে যদি আপনি না মানিয়ে নিতে পারেন তবে আপনার কোথাও চান্সটা হবে কেমনে! নিজের সাথে যুদ্ধ করছি, এদিকে ফ্যামিলির সিদ্ধান্ত মানতে পারছি না। আমার মানসিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেল। ফ্রেন্ডরা কেউ অফিসিয়ালি ঘোষণা দিয়ে আমার সাথে সম্পর্ক বাদ দিচ্ছে, তো কেউ আনঅফিসিয়ালি। পাড়ার আন্টিদের ঈদ চলছে। এতদিন যারা আমার থেকে শুনত তাদের ছেলেমেয়েদের কিভাবে পড়াবেন, কই পড়াবেন, তারা তখন ডেকে ডেকে বলতেন, ‘কোথাও গতি হলো তোমার?’ কেউ কেউ ফোন করে খোঁজ নিচ্ছেন ন্যাশনালে চান্স পেয়েছি কি না। একটা ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা শেষে যথারীতি মুখ কালো করে ফিরছি। একজন বড় ভাইয়ার সাথে দেখা। ভাইয়া শুধু বললেন, ‘বড় ভার্সিটিতে ঝাড়ু দেয়া সাবজেক্টে পড়তে পারো, অথবা ঝাড়ু দেয়া ভার্সিটিতে বড় সাবজেক্টে পড়তে পারো।’ এই একটা কথা শুনে তখন ডিসিশন নিয়ে কোথাও একটা নিজের ছোটখাটো ‘গতি’ করে ফেললাম। খারাপ -ভালো যাই হোক, আমার ভালো লাগে। ফাইনাল পরীক্ষা। পড়াশুনা না করার জন্য চোখে সর্ষে ফুল দেখছি। সিলেবাস দেখে বুঝলাম ফেইল করতে যাচ্ছি। অটোমেটিক চোখে পানি চলে আসছে। ফেইল করব শেষে! বন্ধু শুধু পাশ থেকে বলল, ‘তুই পারবি, ফেইল করলে করবি, যাস্ট পড়তে থাক’। পরদিন পরীক্ষা দিয়ে বুঝলাম ফেইল হবেনা। এই যে আপনার প্রতি বিশ্বাস রাখা একজন স্যার, একজন বড় ভাই, একজন বন্ধু এরাই আপনার জীবনে একেকজন ‘মোটিভেশনাল স্পিকার’। এই যে আপনি, আপনি নিজেই একজন মোটিভেশনাল স্পিকার, আপনাকে মোটিভেট করতে আপনিই পারবেন। জীবনে এই মোটিভেশনাল স্পিকারদের দরকার আছে। খুবই দরকার আছে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ