বাবা মা সন্তানদের বকাঝকা করার কারণে, সন্তানের আত্মহত্যার মতো ঘটনা আজ ও সমাজে, ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, এরকম ঘটনা ঘটে না। যেসব ক্ষেত্রে, এধরনের ঘটনা ঘটে, বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে উঠে এসেছে যেসব তথ্য, তাতে দেখা গেছে, বকাঝকার নামে যা বলা হয়েছে, তা সন্তানের মানসিক স্থিতির ভারসাম্যকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছে। বকার নাম করে, সন্তানের দুর্বল দিকটাকেই প্রকট করে তোলা হয়েছে, আঘাত হানা হয়েছে নিষ্ঠুর ভাবেই। একটি সন্তান, তার নিজের দুর্বলতা সম্পর্কে, সংশোধনের উদ্যোগ না নিলে ও, সচেতন থাকে। আশা করে, মা, বাবা, তার এই দুর্বলতাকে, আগলে রাখবেন। সন্তানের কাছে, মা, বাবা পরম নিশ্চিন্তির আশ্রয়স্থল। সেই নির্ভর করার জায়গা থেকে যখন, আঘাতটা আসে, নিরাপত্তাহীনতার সংকটে পড়ে যায় সন্তান। যদি ও আমরা বলি, অভিমান বা রাগ থেকেই এসব ঘটে, কিনতু, সন্তানের বুকের গভীরে, যে রক্ত ঝরে, তার খবর রাখা হয় না। অভিমান করে, কথা বলা বন্ধ করে দেয়া, না খাওয়া, বাড়ী থেকে পালিয়ে যাওয়া, এসবই ঘটে। কিনতু, আত্মহননের রাস্তায় পা বাড়ানোর মতো ঘটনা ঘটে, চূড়ান্ত মানসিক বিপর্যয়ের ফলে। আশ্রয়হীনতা, নিরাপত্তার অভাববোধই এ রাস্তা দেখায়। ফলে, সন্তান পাড়ি দেয়, অন্য লোকে, যেখানে শুনতে হবে না, তোমার মতো সন্তানের কথা ভাবলে, ঘৃণা বোধ হয়, তোমার মতো সন্তান, সমাজে কলঙ্ক, তোমার মতো সন্তান, মরে গেলে বেঁচে যাই, তোমার মতো সন্তানের মা বাবা বলে, পরিচয় দিতে লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে হয় এসবই । মা বাবা, ভালোর জন্য বকাবকি করেন, এটা সন্তান বুঝলে বা না বুঝলেও, আত্মহত্যার মতো ঘটনা সহসা ঘটে না। যেখানে, মা, বাবা সন্তানের মনের খবর রাখেন না, বকার নামে, সন্তানকে চরম আঘাত হানেন, সেখানেই ঘটে যায়, এরকম দূর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর আক্ষেপ করেন, ও রকম বুঝতে পারলে তো, এরকম বলতাম না। বুঝিয়ে দেন, এই বুঝাটা, প্রয়োজন ছিলো, ঘটনার আগে। সন্তানের নয়, মনে রাখা দরকার, মা বাবার ই, সন্তানকে পৃথিবীতে আমন্ত্রণ জানিয়ে এনেছিলেন তাঁরা, বিসর্জন দেয়ার জন্য নয়। ধন্যবাদ।