শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call
ঘুমের অভাব যেমন মানুষকে নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভোগায় তেমন অতিরিক্ত ঘুমও মহাক্ষতির কারণ হতে পারে আমাদের জন্য। যারা দিনে ১০-১২ ঘণ্টা ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিচ্ছেন তারা মোটেই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী নন। বিজ্ঞানের ভাষায় অতিরিক্ত ঘুমানোকে সাধারণত Hypersomnia or Hypersomnolence বলে। কেউ যদি ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমায় তবে তাকে অতিরিক্ত ঘুম বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অতিরিক্ত ঘুমানোর কারণ ১) আমাদের দেশের মায়েরা সাধারণত আয়রনের অভাবে ভুগে থাকেন আর সেক্ষেত্রে আয়রনের অভাব আছে এমন মানূষের ঘুম বেশি হতে পারে। ২) যাদের ওজন বেশি তাদের ঘুম বেশি হতে পারে। ৩) যেসব মানুষ রাতের বেলায় ঘুমাতে পারেন না তারা দিনের বেলায় অনেকাংশে অনেক ঘুমাতে দেখা যায়। ৪) পারকিনসন্স, এনকেফালাইটিস, এলজেইমার্স, হাইড্রোসেফালাস-এই রোগের রোগীরা বেশি ঘুমাতে পারে। ৫) দীর্ঘমেয়াদী অবসন্নতায় আক্রান্ত রোগীরা অতিরিক্ত ঘুমায়। ৬) ফাইব্রোমায়েলজিইয়ার রোগীরা অতিরিক্ত ঘুমায়। ৭) অনেক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে রোগীরা অনেকক্ষণ ঘুমায়। ৮) এলকোহল সেবনের কারণে অতিরিক্ত ঘুম হয়। অতিরিক্ত ঘুমের কুফল ডায়াবেটিস বেশি ঘুমালে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়৷ যার ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। তাছাড়া স্থূলতা ও ডায়াবেটিস হাত ধরাধরি করে চলতে পছন্দ করে। স্থূলতা বর্তমানে এই সমস্যা ক্রমবর্ধমাণ। কম ঘুমালে যেমন এই সমস্যা দেখা দিতে পারে, ঠিক তেমনই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ঘুমালেও এই সমস্যা হয়। বেশি ঘুমালে শরীরের কোনও মুভমেন্ট হয় না ফলে ক্যালোরি বার্ন হয় না যার ফলে অতিরিক্ত মেদ জমে। বেশি না ঘুমিয়ে ব্যায়াম করুন এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। আয়ুষ্কাল লোপ ভয়ানক হলেও সত্যি এটাই। অত্যধিক ঘুম আয়ু কমিয়ে দেয়। রোগ না হলেও যারা বেশি ঘুমান তারা অন্যদের তুলনায় তাড়াতাড়ি মারা যান। হতাশা: যারা বেশি ঘুমান তাদের মুড সুইং খুব বেশি হয়। হতাশার পরিমাণও তাদের বেশি হয়। তাই বেশিও না কমও না, ঘুম সবসময় দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা। হৃদরোগ বর্তমানে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। যারা দিনে আট ঘণ্টার বেশি ঘুমান তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৩৪ শতাংশ বেড়ে যায়। তাই অত্যাধিক ঘুমালে আজ থেকে চেষ্টা করুন ঘুমের পরিমাণ কমানোর। দুর্বল মস্তিষ্ক খুব বেশি ঘুম আপনার চিন্তাশক্তি দুর্বল করে দেয়৷ ফলে কোনো কিছু মনে রাখতে না পারা, মাঝে মধ্যেই ভুলে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দেয়।সবচেয়ে বড় বিপত্তি হল মনোযোগের অভাব দেখা দেয়, যার ফলে কলেজ হোক বা অফিস সব জায়গাতেই অসুবিধা হয়। করণীয় ১) এলকোহল জাতীয় দ্রব্যাদি সেবন পরিহার করতে হবে। ২) সন্ধ্যার পর ক্যাফেইন জাতীয় খাবার পরিহার করা কারণ এগুলো খেলে ঘুম আসবে না। ৩) ঘুম না আসলে ও বিছানায় জোর করে শুয়ে থেকে চোখ বন্ধ করে তাহকতে হবে,এক সময় না এক সময় ঘুম আসবে। ৪) লাইট অফ করে অবশ্যই ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। ৫) রাতে ঠিকমত ঘুমাতে হবে। ৬) দিনের বেলায় কাজের সময় ঘুমের অভ্যাস পরিহার করতে হবে। ৭) একটা রুটিন লাইফ পরিচালনা করা যেখানে আপনি ঠিক যতটা ঘুমানো উচিত এবং কখন ঘুম থেকে উঠবেন এমন একটা চার্ট থাকবে এবং সেই চার্ট দেখে প্রতিদিন তা ফলো করবেন, দেখবেন সময়ের সাথে সাথে অভ্যাসের মাধ্যমে তা ঠিক হয়ে যাবে