এ কুরআনকে যদি আমি পাহাড়ের ওপর নাযিল করতাম তবে তুমি অবশ্যই তাকে দেখতে,

আল্লাহর ভয়ে বিনীত ও বিদীর্ণ। মানুষের জন্য আমি এ উদাহরণগুলি পেশ করি;

হয়ত তারা চিন্তাভাবনা করবে। (সূরা: আল-হাশর আয়াত:২১)

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

এটি একটি দৃষ্টান্ত। অর্থাৎ কুরআন যদি পাহাড়ের মত কঠিন ও ভারী জিনিসের উপর অবতীর্ণ হতো এবং পাহাড়কে মানুষের মত জ্ঞান-বুদ্ধি ও চেতনা দেয়া হতো তবে পাহাড়ও কুরআনের মাহাত্ম্যের সামনে নত হতো; বরং ছিন্ন ভিন্ন  হয়ে যতো। কিন্তু মানুষ খেয়াল খুশি ও স্বার্থপরতায় লিপ্ত হয়ে তার স্বভাবজাত চেতনা হারিয়ে ফেলেছে। সে কুরআন দ্বারা প্রভাবান্বিত হয় না। অতএব, এটা যেন একটা কাল্পনিক দৃষ্টান্ত। কারণ বাস্তবে পাহাড়ের মধ্যে কোনো চেতনা নেই। কেউ কেউ বলেন, পাহাড়, বৃক্ষ ইত্যাদি বস্তুর মাঝে চেতনা অনুভূতি আছে। কাজেই এটা কাল্পনিক নয়; বাস্তবভিত্তিক দৃষ্টান্ত। তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন।

Call

 যদি আমি এই কুরআন পর্বতের উপর অবতীর্ণ করতাম,[১] তাহলে তুমি দেখতে যে, ওটা আল্লাহর ভয়ে বিনীত ও বিদীর্ণ হয়ে গেছে।[২] আমি এসব দৃষ্টান্ত বর্ণনা করি মানুষের জন্য, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। [৩] [১] এবং পাহাড়ের মধ্যে যদি ঐরূপ বোধ ও অনুধাবনের যোগ্যতা সৃষ্টি করে দিতাম, যেরূপ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছি। [২] অর্থাৎ, কুরআন কারীমে আমি ভাষা-অলঙ্কার ও সাহিত্য-শৈলী, আকর্ষণশক্তি, বলিষ্ঠ প্রমাণাদি এবং নসীহত ও উপদেশের এমন এমন দিক তুলে ধরেছি যে, তা শুনে পাহাড় অতি কঠিনতা, বিশালতা ও উচ্চতা সত্ত্বেও আল্লাহর ভয়ে টুকরো টুকরো হয়ে যেত। এ কথা বলে মানুষকে বুঝানো ও ভয় দেখানো হচ্ছে যে, তোমাকে বুঝার ও অনুধাবন করার যোগ্যতা দেওয়া হয়েছে, তা সত্ত্বেও যদি কুরআন শুনে তোমার অন্তরে কোন প্রভাব সৃষ্টি না হয়, তাহলে তোমার পরিণাম ভাল হবে না। [৩] যাতে কুরআনে বর্ণিত নসীহত থেকে উপদেশ গ্রহণ করে এবং তিরস্কার ও ধমক শুনে যাবতীয় অবাধ্যতা থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে। কেউ কেউ বলেছেন, এই আয়াতে নবী (সাঃ)-কে সম্বোধন করে বলা হয়েছে যে, আমি এই কুরআনকে তোমার উপর নাযিল করেছি, যা এমন মাহাত্ম্যের অধিকারী; যদি তা আমি কোন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তাহলে তা টুকরো টুকরো হয়ে যেত। কিন্তু এটা তোমার উপর আমার অনুগ্রহ যে, আমি তোমাকে এই কুরআনের ভার বরদাস্ত করার মত বলিষ্ঠ ও সুদৃঢ় বানিয়ে দিয়েছি। সুতরাং তুমি সেই ভার বরদাস্ত করেছ, অথচ তা বরদাস্ত করার শক্তি পাহাড়েরও নেই। (ফাতহুল ক্বাদীর) এর পর মহান আল্লাহ তাঁর গুণাবলী বর্ণনা করছেন। যার উদ্দেশ্য তাওহীদ প্রতিষ্ঠা এবং শিরকের খন্ডন। (তাফসীর অাহসানুল বায়ান)