শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে উজ্জ্বল আলোর বিকিরন মেরুপ্রভা নামে পরিচিত। মেরুপ্রভা দেখতে বাতাসে দোদুল্যমান উজ্জ্বল রঙের আলোকীয় পর্দা বা ফিতার মত লাগে। অনেকগুলো সমান্তরাল আলোকরশ্মি একটির পর একটি করে ঘনসন্নিবিষ্ট হয়ে তৈরি করে আলোকপর্দা, যা প্রতিমুহূর্তে স্থানান্তরিত হতে থাকে। অধিকাংশ সময় স্থানান্তরের দিক হয় অনেকটা পূর্ব থেকে পশ্চিমে। আর এসময় এর মধ্যে ঢেউ খেলতে থাকে আলোর উজ্জ্বলতার হ্রাসবৃদ্ধির মাধ্যমে; ঠিক যেমন পানিতে পানির স্তরের উচ্চতার পরিবর্তন দ্বারা ঢেউ তৈরি হয়। আগুনের শিখার ন্যায় অতিউজ্জল আলোকশিখার উজ্জ্বলতা ক্রমে হ্রাস পায় এবং মৃদু উজ্জ্বল আলোকশিখার উজ্জ্বলতা ক্রমে বৃদ্ধি পায়। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০-২০০ মাইল উচ্চতায় মেরুপ্রভা সৃষ্টি হয়। উচ্চতার উপর নির্ভর করে মেরুপ্রভার রঙ হতে পারে লাল, সবুজ, নীল বা বেগুনী।
image
উচ্চ-চার্জ সম্পন্ন ইলেকট্রন যখন বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরের কণার সাথে সংঘর্ষ করে তখন ইলেকট্রন থেকে নির্গত আলো সৃষ্টি করে আলোকপ্রভার। সৌরঝর থেকে উৎপন্ন এই ইলেকট্রনসমূহ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানের সাথে এদের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের হার বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা হ্রাসের সাথে বৃদ্ধি পায় কেন না বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব এর উচ্চতার সাথে সাথে হ্রাস পায়। সুতরাং ইলেকট্রনগুলো বায়ুমণ্ডলের যত গভীরে প্রবেশ করে সংঘর্ষের পরিমাণ তত বৃদ্ধি পায় আর বিকিরিত আলোর পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। বিকিরিত রশ্মির রঙ নির্ভর করে ইলেকট্রনগুলো কত উচ্চতায় কোন পরমাণুর সাথে সংঘর্ষ করে তার উপর।

ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬০ মাইল পর্যন্ত উচ্চতায় নাইট্রোজেনের সাথে সংঘর্ষে বেগুনী রঙের ফোটন নির্গত হয়
৬০-৯০ মাইল উচ্চতার মধ্যে নাইট্রোজেনের সাথে সংঘর্ষে নীল রঙের ফোটন বিকিরিত হয়
৯০-১৫০ মাইল পর্যন্ত উচ্চতায় অক্সিজেনের সাথে ইলেকট্রনের সংঘর্ষে বিকিরিত আলোর রঙ হয় সবুজ
১৫০ মাইলের উপরে অক্সিজেনের সাথে সংঘর্ষে লাল রঙের আলো নির্গত হয়
বিকিরিত এই আলোই নির্ধারণ করে মেরুজ্যোতির বর্ণ।