শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

মানুষের শরীরে তিল বা আঁচিলের অবস্থান দেখে অনেক জ্যোতিষীই বলে থাকেন তাদের সৌভাগ্য কিংবা দূর্ভাগ্যের কথা। তবে এবার আর জ্যোতিষী নয়, স্বয়ং বিজ্ঞানীরাই গবেষণার মাধ্যমে বের করেছেন শরীরের নির্দিষ্ট রকম তিল বা আঁচিলের এক অতি ভয়ংকর পরিণতির কথা। এমনিতে দেখতে খুব সাধারন আর দশটা তিলের মতনই দেখতে এটি। তবে গঠনে হয়তো কিছুটা বড়। তা সেতো অনেকের শরীরেই হয়। কথার সত্যতা মানতেই হবে। তিল বা বড় আঁচিল তো মানুষের শরীরের হরহামেশাই দেখা যায়। কিন্তু তারসাথে এটাও সত্যি যে, ত্বকের অতিরিক্ত পরিমাণে তিল বা আঁচিল কিংবা বড় আকৃতির তিল মানুষকে খুব দ্রুত নিয়ে যেতে পারে ক্যান্সারের দিকে ( টেলিগ্রাফ )। শুনতে ভয় ভয় লাগলেও বাস্তবে এই সমস্যাকে দূর করে ফেলা যায় খুব দ্রুত একে চিহ্নিত করার মাধ্যমে। কিন্তু কি করে চিহ্নিত করবেন শরীরের মাঝে লুকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে ক্যান্সারের দিকে ঠেলে দেওয়া তিল বা আঁচিলকে? চলুন জেনে নিই উপায়গুলো। মূলত ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এই মেলানোমাগুলো আমাদের শরীরে স্বাভাবিকভাবেই অবস্থান করলেও ভেতরে ভেতরে সেটি ক্যান্সারকে ছড়িয়ে দিতে পারে অনেকটা দূর অব্দি। আর একে চিনতে হলে প্রথমেই আপনার একটু জ্ঞান রাখতে হবে নিজের ত্বক সম্পর্কে। আমাদের ত্বকের ভেতরে মোট তিনটি স্তর রয়েছে। এদের ভেতরে একটি হচ্ছে উপরের পর্দা আর সবচাইতে পাতলা পর্দা এপিডারমিস। এটি ভেতরের বাকি দুই পর্দাকে সুরক্ষিত করে। এর পরের স্তরটির নাম হচ্ছে মেলানোসাইটিস। যেটি কিনা মেলানিন নামক এক ধরনের রঙ্গিন রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত করার মাধ্যমে ত্বককে সুরক্ষিত করে। তবে মাঝে মাঝে এই মেলানিন একটা জায়গায় জমাট বেঁধে তৈরি করে ছোট ছোট তিল বা আঁচিলের ( ক্যান্সার অর্গানাইজেশন )। সাধারন তিল বা আঁচিলগুলো মূলত এক ইঞ্চির চার ভাগের এক ভাগ কিংবা তার কাছাকাছি আকৃতির হয়ে থাকে। বয়সের সাথে সাথে অবশ্য সেগুলোর আকৃতি বাড়তে থাকে। এছাড়াও গর্ভাবস্থা বা কিছু বিশেষ সময়ে শরীরে হরমোনের হেরফের হলেও তিল বা আঁচিলের জন্ম হয়। আর এই মোলানোমা থেকে জন্ম নেওয়া কিছু তিলই সাদা চোখে তিল মনে হলেও গড়ে ওঠে ক্যান্সার হয়ে। এমনিতে এ সমস্যায় ভুগে রোগীদের মৃত্যু হলেও সময় থাকতে ধরা পড়লে মানুষ বেঁচেও যেতে পারে। আর তাই এই ক্যান্সার বহন করা তিল বা আঁচিলগুলোকে চিনতে হলে প্রতি ৩০ দিন পরপর নিজের শরীরের তিলগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখুন। প্রতিবার সেগুলোকে পরীক্ষা করার সময়- ১. তিল বা আঁচিলের মাঝ বরাবর দাগ কাটুন। দেখুন সেটার উভয় পাশের আকৃতিই একরকম কিনা। ২. তিলের আকার নির্দিষ্ট বা গোলাকৃতির এবং এক স্থানে আবদ্ধ কিনা খেয়াল রাখুন। কারণ ক্যান্সার বহনকারী তিলের নির্দিষ্ট আকৃতি থাকেনা। ৩. খেয়াল করুন তিলের রংকে। সেটা কি কিছুদিন পরপর পরিবর্তিত হচ্ছে? কিংবা এক ইঞ্চির ৪ ভাগের এক ভাগের চাইতে বড় দেখাচ্ছে? এরকম কোনধরনের সমস্যা হলেই সেটা পরীক্ষা করান ডাক্তারকে। ( হাউ স্টাফ ওয়ার্কস ) এমনিতে ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারবাহী তিল বা আঁচিল আপনার শরীরে পাওয়া গেলে তক্ষুনি সেটাকে খানিকটা তুলে পরীক্ষা করবেন তারা। এরপর তাদের ধারণা সত্যি হলে পুরোপুরিভাবেই তুলে ফেলা হবে তিল বা আঁচিলটি। তবে সমস্যার কথা হচ্ছে এতে করে ক্যান্সারের ঝুঁকি ১০০ ভাগ চলে গেলেও এরপরেও খানিকটা ঝুঁকি আপনার থেকেই যাবে পাশের চামড়ার মাধ্যমে হতে পারা ক্যান্সারের। সে ক্ষেত্রে আরো বেশকিছুদিন ডাক্তারের পরামর্শে থাকতে হবে আপনাকে।