শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

*কপূর যে যে কাজে লাগে তা নিচে দেখুন: ১। মশা-মাছি তাড়াতে ঘরের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে দিন কর্পূর। এর গন্ধে মশা-মাছি ঘর থেকে পালাবে ও সেই সাথে ঘরের দুর্গন্ধ দূর করতেও এটি খুব কার্যকরী ঘরোয়া ওষুধের কাজ করে। অর্থাৎ এটি আপনার নতুন রুম ফ্রেশনর কেনার খরচ বাঁচিয়ে দেবে।  ২। পিঁপড়ে দূর করতে আপনার ঘরে যদি পিঁপড়ের উপদ্রব বাড়ে তাহলে এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য অনেকে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন। সেই কারণে অনেকে বাজার চলতি কীটনাশক কিনে ফেলেন। কিন্তু এইসব কেমিক্যাল যুক্ত কীটনাশকের ক্ষতিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বাড়ির শিশু ও বয়ষ্কদের জন্য মারাত্মক হতে পারে। তাই ক্ষতিকর কীটনাশকের পরিবর্তে জলের সঙ্গে কর্পূর মিশিয়ে ঘর মুছে নিতে পারেন অথবা ঘরের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে দিন কর্পূর। দেখবেন কর্পূরের গন্ধে পিঁপড়েরা ঘর ছেড়ে পালাবে।  ৩। ছারপোকা তাড়াতে ছারপোকা তাড়াতেও কর্পূর বেশ কার্যকরী একটি ওষুধ। ছারপোকার হাত থেকে মুক্তি পেতে বিছানার চাদর কেচে, ধুয়ে নিন। সাথে তোষক, ম্যাট্রেস এইগুলি রোদে দিন। তারপর কয়েকটি কর্পূরের টুকরো কাপড়ে মুড়ে বিছানা ও ম্যাট্রেসের মাঝামাঝি রেখে দিন। এতে আপনার বিছানা ছারপোকা মুক্ত হবে।  ৪। ত্বকের সমস্যায় ত্বকের চুলকানি বা র্যাশের সমস্যায় কার্পুরকে কাজে লাগানো যায় । এর জন্য প্রথমে এক টুকরো কর্পূর সামান্য জলের সঙ্গে মিশিয়ে একটি দ্রবণ তৈরী করে নিন। তারপর ত্বকের সেই আক্রান্ত স্থানটি এই দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন স্কিনের চুলকানি ভাব আর র্যাশের সমস্যা মুহূর্তে কমে যাবে। এই টোটকাটি এপ্লাই করে দেখতে পারেন তবে কখনওই শরীরের কোনও ক্ষত স্থানে বা কেটে যাওয়া স্থানে কর্পূর লাগাবেন না। কারণ, কর্পূর রক্তের সঙ্গে মিশে গেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে। এতেও যদি চুলকানি না কমে তাহলে অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে নেবেন।  ৫। শিশুর ঠান্ডা লাগলে অনেক সময় ঠান্ডা লেগে শিশুর বুকে কফ জমে যায়। এক্ষেত্রে শিশুর বুকের কফ দূর করতে বা সর্দিতে নাক বন্ধ সারাতে কাজে লাগাতে পারেন কর্পূর। এর জন্য নারিকেল তেল বা সরষের তেলের সঙ্গে সামান্য কর্পূর মিশিয়ে উষ্ণ গরম করে শিশুর বুকে ও পিঠে মালিশ করে দেখুন। দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।  ৬। রূপচর্চার কাজে মুখে ব্রণ বা ব্রণর দাগ সারাতে কয়েক ফোঁটা কর্পূর যে কোনো এসেনশিয়াল অয়েল বা অন্য কোনও তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্রণ আক্রান্ত ত্বকে লাগালে ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর হয়ে যায়। এরজন্য এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা আমন্ড তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এই ভাবে ব্যবহার করলে, কিছুদিনের মধ্যেই এর কার্যকরিতা আপনার নজরে পড়বে।  ৭। চুল ঝরা ও খুশকির সমস্যা দূর করতে চুল ঝরা ও খুশকির সমস্যা থেকে রেহাই পেতে এই কর্পূরের টোটকাটিকে কাজে লাগাতে পারেন। আপনি মাথায় নিয়মিত যে তেল ব্যবহার করেন তার সঙ্গে কর্পূর মিশিয়ে একটু গরম করে মাথার স্ক্যাল্পে মালিশ করুন। কিছুদিন এই ভাবে ব্যবহার করলে চুলের গোড়া শক্ত হয়ে চুল ঝরার পরিমাণ অনেকটা কমে যায়। চুলে শ্যাম্পু করার আগে এই তেলের মিশ্রণ মাথার তালুতে ও চুলে মাখলে এটি খুশকির সমস্যাও দূর করতে সাহায্য করবে। ক্যাম্ফর অয়েল বা কর্পূরের তেল হেয়ার মাস্কের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুলে সফটনেস আসে, চুল সাইন করে আর চুলের গ্রোথও হয়।  ৮। মাথার উকুনের ঘরোয়া প্রতিকার চুল ঝরা সমস্যা ও খুশকির সমস্যা দূর করা ছাড়াও মাথার উকুন তাড়াতেও কর্পূর একটি শক্তিশালী উপাদান। কি ভাবে ব্যবহার করবেন? নারকেল তেলে গুঁড়ো কর্পূর কিছুটা যোগ করে মিশিয়ে নিন,এর জন্য তেলটাকে সামান্য গরম করে নিতে পারেন। এরপর শুতে যাওয়ার আগে এই কর্পূর মিশ্রিত তেলটি মাথার স্ক্যাল্পে এবং চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। পরের দিন শ্যাম্পু করে চুলটাকে ধুয়ে নিন। দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি মাথায় একটিও উকুনও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এটির কারণ কর্পূরের বিশেষ গুণ উকুনের শ্বাসরোধ করে তাদের হত্যা করে, যার ফলে খুব সহজেই উকুনের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়৷  ৯। অস্টিও-আর্থারাইটিস নিরাময়ে হাঁটুর ব্যাথা বা অন্য জয়েন্টের ব্যাথায় কষ্ট পাচ্ছেন? বিভিন্ন দামি দামি ক্রিম বা মলম লাগাচ্ছেন? কিন্তু সেইরকম আশানুরূপ ফল পাচ্ছেন না। তাহলে এই সব মলমের বদলে কর্পূর পেস্টটি একবার ব্যবহার করেই দেখুন না কিছুদিন। এর জন্য কর্পূর গুঁড়ো জলে মিশিয়ে হাঁটুতে বা যে জয়েন্টে ব্যাথা সেখানে লাগান। আপনি চাইলে আপনার মলমের সাথে মিশিয়েও লাগাতে পারেন। কর্পূরের বিশেষ মেডিসিনাল প্রপার্টি অস্টিও-আর্থারাইটিসের ব্যাথা খুব দ্রুততার সাথে কমিয়ে দেবে। কর্পূর তেল , বিশেষত পিঠে ব্যথার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। কর্পূরের আন্টি ইনফ্লামমেটরি প্রপার্টি মাসেলকে রিলাক্স করতে সাহায্য করে। যার ফলে পেশি টানের ব্যাথায় যারা কষ্ট পাচ্ছেন, তারা ক্যাম্ফর অয়েলের ব্যবহার করে দেখতে পারেন। খুব তাড়াতাড়ি এর সুফল পেয়ে যাবেন।  ১০। ঘুমের ঔষধ কর্পূর তেল শরীর এবং মনকে শিথিল করতে সহায়তা করে। কর্পূর জলে মিশিয়ে স্নান করলে এটি শরীরে সতেজতা আনতে সাহায্য করে। গ্রীষ্ম কালে , স্নানের সময় জলে কয়েক ফোঁটা কর্পূর তেল মিশিয়ে স্নান করলে আপনি শীতল বোধ অনুভব করবেন। তাছাড়া রাতে ঘুম না এলে বালিশে একটু কর্পূর ঘষে নিন, এই পদ্ধতি খুব সহজে আপনাকে ঘুম পাড়াতে সাহায্য করবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ