শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

ধন্যবাদ।সুন্দর একটি প্রশ্ন করেছেন।উত্তরটি আমি একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রথমত একজন মুসলিমের জন্য সুদ সম্পুর্ন হারাম।এই বিষয়ে অন্যকোন ব্যাখার প্রয়োজন নেই। এইবার আপনার প্রশ্নে আসা যাক।আপনি প্রশ্ন করেছেন একজন মুসলিম কি এই যুগে সত্যিই সুদ থেকে সম্পুর্ণ রূপে দূরে থাকতে পারে? উত্তর হচ্ছেঃ হ্যা এবং না দুটোই। আপনি ব্যাক্তিগত ভাবে সুদ থেকে দূরে থাকতে পারেন কিন্তু সত্যিকথা হচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশে সুদের বেড়াজাল থেকে সম্পুর্ণ বের হওয়া সম্ভব নয়।কেন সম্ভব নয়? প্রথমত সুদ দেওয়া এবং নেওয়া দুটিই কিন্তু হারাম। আপনি দৈনন্দিন জীবনে সুদের স্পর্শ রয়েছে এরকম অনেক কিছুই ব্যবহার করছেন কিংবা ভোগ করছেন।কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যাকঃ ১) আপনি প্রতিদিন দোকান থেকে কিছু না কিছু কিনে খাচ্ছেন। বেশিরভাগ কোম্পানি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে তাদের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছে।ব্যাংক কোম্পানিগুলোকে ফ্রিতে লোন দিচ্ছে না।অর্থাৎ কোম্পানিগুলোকে সুদ দিতে হচ্ছে।তার মানে কোম্পানিটি হারাম কাজের স্পর্শে রয়েছে।আপনি যে কোম্পানিটির খাবার খাচ্ছেন সেটি হারাম খাবার হয়ে যাচ্ছে। ২) এখনকার যুগে বেশিরভাগ বাড়িই কিন্তু ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে করা হচ্ছে।অর্থাৎ বাড়ির মালিককে সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে।তার মানে এমন ও হতে পারে আপনি এমন কোনো বাসায় ভাড়া থাকছেন যেটিও হারাম কাজের স্পর্শে তৈরি করা হচ্ছে। ৩) আপনি হতে পারে এমন কোনো প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করছেন,যারা ব্যাংক থেকে লোন নিচ্ছে এবং সুদ পরিশোধ করছে।তাহলে সেই কোম্পানি ও হারামের স্পর্শে আছে। আর আপনি যদি কোনো ব্যাংকে জব করে থাকেন তাহলে তো সেটা সম্পুর্নই হারাম বেতন নিচ্ছেন। ৪) সরকার বিভিন্ন প্রজেক্ট কিংবা রাস্তাঘাট করছে। এরকম অনেক প্রজেক্টই রয়েছে যেখানে সরকারকে বিভিন্ন দেশ থেকে লোন নিতে হচ্ছে।সেই লোনের জন্য আবার সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে।বাংলাদেশ সরকার সঞ্চয় পত্রের মাধ্যমে জনগন থেকে লোন নিচ্ছে সেই লোনের জন্য আবার জনগনকে সুদ দিতে হচ্ছে। আপনি যদি সঞ্চয়পত্র ব্যবহার করে থাকেন সেটাও সুদের মধ্যে পড়ছে।তাহলে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের পুরো অর্থনীতি ব্যবস্থাই সুদের উপর নির্ভরশীল। পরিশেষে এটাই বলতে চাই,বর্তমানে সুদের বেড়াজাল থেকে সম্পূর্ণ রূপে বের হওয়া সম্ভব নয়।তবে এটার জন্য আপনি গুনাহগার হবেন কিনা সেটা সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। আপনি এখন ব্যবসা করতে গেলেও আপনার টাকার প্রয়োজন হবে।ব্যাংক থেকে লোন নিতে গেলেও আপনাকে বাধ্য হয়েই সুদ পরিশোধ করতে হবে।ফ্রিতে কেউই আপনাকে টাকা লোন দিবে না। এর বেড়াজাল থেকে বের হওয়ার জন্য বাংলাদেশের পুরো অর্থনীতি ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে।অথবা আপনাকে এমন কোন দেশে চলে যেতে হবে যেখানে সম্পুর্ন ইসলামি আইনে দেশ চলে। তবে একজন মুসলিম হিসেবে সবার উচিত ব্যাক্তিগত ভাবে সুদ দেওয়া এবং নেওয়া দুটিই থেকে বিরত থাকা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ