শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

সূর্যের তাপে আফ্রিকানদের গায়ের রঙ কালো--- এ ধারণা সম্পূর্ন ভুল। ব্যাপারটা অনেকটা শহুরে কেউ যদি সপ্তাহ খানেক গ্রামে গিয়ে ঘুরে আসে আর গ্রাম থেকে ফেরার পর তাকে দেখে আমরা বলে উঠি--কিরে গ্রামে গিয়ে তো কালো হয়ে গেলি --অনেকটা এই রকম। আফ্রিকান বাবা মায়ের সন্তান বাংলাদেশে যদি জন্ম নেয় তবে কি সে তূলনামূলকভাবে কম কালো হবে? উত্তরঃ না, না, না। সারা পৃথিবী, আরব, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া এমনকি চীন-ফিলিপাইন গোত্রের মানূষের মধ্যেও আমরা আফ্রিকান কালোত্ব অর্থাৎ নিগ্রো বলতে যে রকমের রঙ ও বৈশিষ্ট্য বুঝে থাকি তা দেখতে পাই। আসল কারণটা ব্যাখা করা যায় দুটি দৃষ্টি ভংগি থেকে। প্রথমতঃ বিবর্তনবাদের একটি ধারা থেকে, যেখানে বলা হয়ে থাকে কালো রঙের কারণে ট্রপিকাল রিজিয়নের মানুষদের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্নি থেকে বাচাতে এই মেলানিনের উতপত্তি হয়েছে। ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার বছর আগে আধুনিক মানুষের যে ধারাটি আফ্রিকা থেকে পৃথিবীর অন্যন্য অংশে যায় তাদের গায়ের রঙ তূলনামূলকভাবে হালকা হয়েছে বিভিন্নভাবে। প্রথমত যে লাইনেজটি ইউরোপে যায় তাদের শরীরে মেলানিন কমে গেছে কারণ শীত প্রধান দেশে এমনিতে শরীরের উপর কাপড় থাকে অনেক বেশি। তার উপরে যদি শরীরে মেলানিনের মাত্রা বেশি থাকে ( মেলানিনের জন্য গায়ের রঙ কালো হয়, তবে সূর্যের আলোতে মেলানিন বাড়ে কমে না, এটা জেনেটিকাল ব্যাপার) তবে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি এর জন্য পর্যাপ্ত সূর্য রশ্নি পাবে না; কেননা সূর্য রশ্নির প্রভাবে শরীরে ভিটামিন ডি প্রস্তুত হয়। আর মানুষের আদি প্রবণতা অনুযায়ী মানুষ তুলণামূলক হাল্কা গায়ের রঙের মেয়েদের সঙ্গিনী হিসেবে পছন্দ করে--ফেয়ার সেক্স ধারণাটি এই ভাবে এসেছে--আর তুলনামূলক হাল্কা গায়ের রঙের মেয়ে সঙ্গির সাথে মিলনে জন্মানো সন্তানের ক্ষেত্রে গায়ের রঙের জিনের কন্বিনেশন বাবা-মা দুজনের জিনের কম্বিনেশনের উপর নির্ভর হয়ে পড়ে আর এইভাবেই মিশ্র বা টামাটে গায়ের রঙের উদ্ভব। অল্প কথায় জটিল একটা বিষয় বলতে গিয়ে তথ্যে কিছুটা গ্যাপ ইচ্ছাকরেই রাখতে হচ্ছে কারণ লেখার সীমানা বেশতোতে নির্ধারণ করা থাকে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, মানব উদ্ভব প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে আদি লাইনেজ বা ধারা কিন্তু কৃষনাঙ্গরা নয়। এটা তুলনামূলক ভাবে বাদামী গায়ের রঙের আফ্রিকান বুশম্যানেরা--পিগমিরা আর বান্টু উপজাতিরা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ