শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

তার নির্দিষ্ট কোনো নাম উল্লেখ নেই, তবে হাদীসের কিতাবে এইভাবে আছে,,,,,,,, ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘সর্বশেষে যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে বের হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে, তার সম্পর্কে অবশ্যই আমার জানা আছে। এক ব্যক্তি হামাগুড়ি দিয়ে বা বুকে ভর দিয়ে চলে জাহান্নাম থেকে বের হবে। তখন আল্লাহ বলবেন, ‘যাও জান্নাতে প্রবেশ কর।’ সুতরাং সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। ফলে সে ফিরে এসে বলবে, ‘হে প্রভু! জান্নাত তো পরিপূর্ণ দেখলাম।’ আল্লাহ আয্যা অজাল্ল্ বলবেন, ‘যাও, জান্নাতে প্রবেশ কর।’ তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত তো ভরে গেছে। তাই সে আবার ফিরে এসে বলবে, ‘হে প্রভু! জান্নাত তো ভরতি দেখলাম।’ তখন আল্লাহ আয্যা অজাল্ল্ বলবেন, ‘যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। তোমার জন্য থাকল পৃথিবীর সমতুল্য এবং তার দশগুণ পরিমাণ বিশাল জান্নাত! অথবা তোমার জন্য পৃথিবীর দশগুণ পরিমাণ বিশাল জান্নাত রইল!’ তখন সে বলবে, ‘হে প্রভু! তুমি কি আমার সাথে ঠাট্টা করছ? অথবা আমার সাথে হাসি-মজাক করছ অথচ তুমি বাদশাহ হাসি-ঠাট্টা তোমাকে শোভা দেয় না।’’ বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এমনভাবে হাসতে দেখলাম যে, তাঁর চোয়ালের দাঁতগুলি প্রকাশিত হয়ে গেল। তিনি বললেন, ‘‘এ হল সর্বনিম্ন মানের জান্নাতী।’’ (বুখারী-মুসলিম) [সহীহুল বুখারী ৬৫৭১, ৭৫১১, মুসলিম ১৮৬, তিরমিযী ২৫৯৫, ইবনু মাজাহ ৪৩৩৯, আহমাদ ৩৫৮৪, ৩৭০৬, ৩৮৮৯, ৪৩৭৭ হাদিসের মানঃ সহিহ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

 মৃত্যুর আগে কেউ মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলে এ বান্দাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। বিচার-ফয়সালা হিসাব-নিকাশের পর যদি কারো শাস্তিও হয়; তারপরও ঈমানদার ব্যক্তি জান্নাতে যাবেন। হাদিসের বিশুদ্ধ বর্ণনা থেকে তা প্রমাণিত। এমনকি সবার শেষে কে জান্নাতে প্রবেশ করবে; এ সম্পর্কেও হাদিসে পাকের বর্ণনায় ওঠে এসেছে। কে হবে সেই ব্যক্তি? হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ তাআলা বিচারকাজ শেষ করার পর ‘লা ইলাহা ইল্লাহু’র সাক্ষ্যদাতাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করার ইচ্ছা করবেন এবং ফেরেশতাদেরকে আদেশ করবেন তাদের বের করে আনতে। সেজদার চিহ্ন দেখে দেখে ফেরেশতারা তাদেরকে চিনতে পারবে। আর আল্লাহ তাআলা বনি আদমের সেজদার স্থানগুলোকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। সুতরাং ফেরেশতারা তাদেরকে এমতাবস্থায় বের করবে যে, তখন তাদের দেহ থাকবে কয়লার মতো। তারপর তাদের দেহে পানি ঢেলে দেয়া হবে। যাকে বলা হয় ‘মাউল হায়াত’ বা ‘সঞ্জীবনী পানি’। সাগরের ঢেউয়ে ভেসে আসা আবর্জনায় যেরূপ উদ্ভিদ জন্মায়, পরে এগুলো যেরূপ সজিব হয় তারাও সেরূপ সজিব হয়ে যাবে। এসময় জাহান্নামের দিকে মুখ করে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকবে আর বলবে- হে প্রভু! জাহান্নামের লু হাওয়া আমাকে ঝলসে দিয়েছে, এর জ্বলন্ত আঙ্গার আমাকে জ্বালিয়ে দিয়েছে। সুতরাং তুমি আমার চেহারাটাকে জাহান্নামের দিক থেকে ঘুরিয়ে দাও। এভাবে সে আল্লাহকে ডাকতে থাকবে। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, আমি যদি তোমাকে এটা দিয়ে দিই তবে তুমি অন্যটির প্রার্থনা করবে? লোকটি বলবে, ‘না’, তোমার ইজ্জতের কসম আল্লাহ! আর অন্য কিছু চাইবো না। সুতরাং তার চেহারাটা জাহান্নামের দিক থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। এরপর সে বলবে, হে প্রভু! তুমি আমাকে জান্নাতের দরজার কাছাকাছি করে দাও। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি বলনি যে, তুমি আমার কাছে আর কিছু চাইবে না? আফসোস তোমার জন্য আদম সন্তান! তুমি কতইনা গাদ্দার! সে এরূপই প্রার্থনা করতে থাকবে। তখন আল্লাহ বলবেন, সম্ভবত আমি যদি তোমাকে এটা দিয়ে দিই, তবে তুমি অন্য আরেকটি আমার কাছে দাবি করবে। লোকটি বলবে, ‘না’, তোমার ইজ্জতের কসম আল্লাহ! অন্য কিছু আর চাইবো না। তখন সে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে এ মর্মে ওয়াদা করবে যে, সে আর কিছুই চাইবে না। তখন আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের দরজার কাছাকাছি করবেন। সে যখন জান্নাতের মধ্যস্থিত নেয়ামতগুলো দেখতে পাবে; তখন আল্লাহ যতক্ষণ চাইবেন ততক্ষন সে চুপ করে থাকবে। এরপরই সে বলতে থাকবে, হে প্রভূ! তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি কি বলনি যে, তুমি আর কিছু চাইবে না? আফসোস, তোমার জন্য হে আদমসন্তান! তুমি কতইনা গাদ্দার। লোকটি বলবে, হে প্রভূ! তুমি আমাকে তোমার সৃষ্টি জীবের মাঝে সবচেয়ে হতভাগ্য করো না। এভাবে সে প্রার্থনা করতে থাকবে। পরিশেষে আল্লাহ তাআলা হেসে ফেলবেন- আর আল্লাহ তাআলা যখন হেসে ফেলবেন তখন তাকে জান্নাত প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দেবেন। এরপর যখন সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন তাকে বলা হবে, তোমার যা ইচ্ছে হয় আমার কাছে চাও। সে (বিভিন্ন) আবেদন করবে; এমনকি (এক সময়) তার আকাঙ্ক্ষা শেষ হয়ে যাবে। তখন আল্লাহ বলবেন- এগুলো তোমার এবং এর সমপরিমাণও তোমার। হজরত আবু হুরায়রা বলেন, ঐ লোকটি হচ্ছে সর্ব শেষে জান্নাতে প্রবেশকারী লোক। (বুখারি) এ কারণেই মানুষের উচিত, মহান রবের রহমত থেকে নিরাশ না হওয়া। আল্লাহ তাআলা আশাবাদীদের এভাবেই রহমত দান করবেন। জান্নাত দান করবেন। আল্লাহর রহমতের প্রতি একনিষ্ঠ বিশ্বাস থাকলে তিনি দুনিয়া ও পরকালে অসংখ্য নেয়মতে জীবন পরিপূর্ণ করে দেবেন। সুতরাং সব বনি আদমের উচিত, আল্লাহর রহমতের প্রতি অগাধ আস্থা এবং বিশ্বাস রাখা। আল্লাহর হুকুম-আহকাম যথাযথভাবে পালন করা। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন গড়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করে যাওয়া। Scorching Sun

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ