শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

মেসোপটেমিয়ার উত্তরাংশে অ্যাসেরীয়রা প্রাধান্য বিস্তার করে। ক্যাসাইটদের আক্রমণে প্রাচীন ব্যাবিলন সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে তারা এই সভ্যতার উত্তরাধিকার লাভ করে। খ্রিস্টপূর্ব ১৩০০ অব্দের মধ্যেই অ্যাসেরীয়রা সমগ্র উত্তর মেসোপটেমিয়া দখল করে নেয়। অ্যাসেরীয়রা মূলত ব্যাবিলনীয় সভ্যতা দ্বারা প্রভাবিত হলেও সভ্যতার ইতিহাসে তাদের নিজস্ব অবদানও কম নয়। স্থাপত্য, ভাস্কর্য, চিত্রকলা, কারুশিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাদের মৌলিক উদ্ভাবনী ক্ষমতার ছাপ সুস্পষ্ট। অ্যাসেরীয়রা প্রথমদিকে ব্যাবিলনের কিউনিফর্ম লিপির ব্যাপক ব্যবহার করে। পরে তারা আর্মেনিয় ভাষাও বেশ ব্যবহার করে। অ্যাসেরীয় রাজারা প্রাচীন ঐতিহ্য সংরক্ষণেও সচেতন ছিলেন। রাজা সেনাচেরি তার রাজধানী নিনেভায় কাদার চাকতি সংরক্ষণের মাধ্যমে একটি বিশাল গ্রন্থাগার গড়ে তোলেন। তবে রাজা আসুরবানিপাল প্রতিষ্ঠিত নিনেভায় গ্রন্থাগারকে এশিয়ার প্রথম গ্রন্থাগার বলা হয়। এখানে ২২,০০০ এর বেশি কাদার চাকতির পুস্তক ছিল। এগুলো অধিকাংশই ব্রিটিশ যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। ধর্মীয় দিক থেকে অ্যাসেরীয়রা বহু দেব-দেবীর বিশ্বাস ও তাদের পূজা করত। তাদের প্রধান দেবতা ছিল আসুর। এরপর ছিল ইশতারের স্থান। অ্যাসেরীয়রাই প্রথম বৃত্তের ডিগ্রি নিরূপণ এবং অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ণয় করতে সক্ষম হয়। জ্যোতির্বিদ্যার ক্ষেত্রে তাদের অবদান অতুলনীয়। তারাই প্রথম পাঁচটি গ্রহ আবিষ্কার করে এগুলোর নামকরণ করেছিলেন। চিকিৎসা বিজ্ঞান, রোগ নির্ণয় ও প্রতিকার ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও তাদের অগ্রগতি ছিল উল্লেখযোগ্য। অ্যাসেরীয়দের বলা হয় এশিয়ার রোমান। রোমানরা যেমন গ্রীক সভ্যতাকে পৃথিবী ব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছিল, অ্যাসেরীয়রাও একই ধরণের ভূমিকা পালন করেছিল ব্যাবিলনীয় সভ্যতা বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ