শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

দুই-এক বছর আগে ইসরাইল সবসময় আমেরিকার সমর্থন পায় কেন তা নিয়ে ইংরেজী কোরায় বেশ কয়েকটি চমৎকার উত্তর পড়েছিলাম, ভেবেছিলাম সেগুলো একটু রিভিশন দিয়ে এসে আর কিছুক্ষণ গুগল ঘাটাঘাটি করে খুব সহজে উত্তরটি দিয়ে দেওয়া যাবে। কিন্তু বিধিবাম, ইংরেজি কোরায় গাদা গাদা প্রশ্ন মিলিত হয়ে সেই উত্তরগুলো আর খুঁজে পাওয়ার যো নেই। ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করেও খুব সহজে এই উত্তরের মূলে পৌঁছানো সম্ভব নয় কারণ বেশিরভাগ ওয়েবসাইটই প্রপাগান্ডার দৃষ্টিকোণ হতে লেখা এবং সবগুলো কারণ একসাথে গুছিয়ে পাওয়া যায় না। তবুও বিভিন্ন সূত্র ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘাটাঘাটি করে এবং স্মৃতিভান্ডার হাতড়ে একটি উত্তর দাড়া করালাম। আশা করি উত্তরটি যথেষ্ট নিরপেক্ষ এবং বিশ্লেষণধর্মী হয়েছে ইভানজেলিক্যাল খ্রিস্টান : আমেরিকার ইসরাইলের প্রতি সমর্থনের মূল কারণ খুব সম্ভবত এর ইভানজেলিক্যাল খ্রিস্টান সম্প্রদায়। ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান সম্প্রদায় হলো আমেরিকার সবচেয়ে বড় একক ধর্মীয় গোষ্ঠী যারা আমেরিকার মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ এবং মূলত দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে বাস করে। ইভানজেলিক্যাল খ্রিস্টানদের ইজরাইলের কট্টর সমর্থক হওয়ার কারণ তারা মনে করে ইহুদিরা জেরুজালেমে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত পৃথিবীতে যিশুখ্রিস্টের পুনরাগমন হবে না। মুসলিমদের মত এরাও যিশুখ্রিস্টের পুনরুত্থানে বিশ্বাসী। যীশু খ্রীষ্ট নাকি পুনরায় পৃথিবীতে এসে আরমাগেডনের যুদ্ধে শয়তানকে পরাজিত করবে এবং ইহুদিরা খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবে। এরপর এক হাজার বছর পৃথিবীতে শান্তি বিরাজ করবে। এই বিশ্বাসের কারণে ইভানজেলিক্যাল খ্রিস্টানেরা সবসময়ই ইসরাইলে ইহুদি বসতি স্থাপনের কট্টর সমর্থক এবং লবিং এর মাধ্যমে আমেরিকার রাজনীতিবিদদের উপর চাপ সৃষ্টি করে ইজরায়েলকে সমর্থন যোগানোর। ইজরায়েল পন্থী লবিং : ইভানজেলিক্যাল খ্রিস্টানদের পাশাপাশি বিভিন্ন ইজরাইলপন্থী ইহুদি লবিং গ্রুপও সক্রিয় রয়েছে আমেরিকার ইসরাইলপন্থী নীতি গ্রহণের জন্য। ইজরাইল পন্থী লবিং গ্রুপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল  বা সংক্ষেপে আইপ্যাক যারা মূলত সিনেটর প্রার্থীদের রাজনৈতিক ক্যাম্পেইনে অর্থের যোগানের মাধ্যমে তাদের ইসরাইলকে সমর্থন জোগাতে বাধ্য করে। আইপ্যাক সরাসরি সিনেটরদের টাকা দেয় না তারা বরং ইসরাইলপন্থী ধনাঢ্য ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটির মাধ্যমে কংগ্রেসের সদস্য হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের টাকা দেয় এই শর্তে যে তাদের ইসরাইলপন্থী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ব্যাপারটা আরেকটু খোলাসা করে বলা যাক, প্রতিবছর আইপ্যাকের বার্ষিক নীতিমালা নির্ধারণী কনফারেন্স যে হল রুমে বসে তার পাশের রুম গুলোতেই ধনাঢ্য দাতা এবং আইপ্যাক সমর্থিত নির্বাচনী প্রার্থীদের ডেকে আনা হয় কথা বলার জন্য। পাশের রুম গুলোর কার্যকলাপ সরাসরি আইপ্যাকের নামে পরিচালিত হয় না, সুতরাং এভাবে ইসরাইলপন্থী কংগ্রেস প্রার্থীদের অর্থের যোগান দেওয়াতে আইপ্যাকের ঘাড়ে দোষ পরে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ