শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

হকি  একটি প্রাচীন ও জনপ্রিয় একটি খেলা। প্রতি দলে ১১ জন খেলোয়াড় নিয়ে দুটি দলের মধ্যে সমতল ঘাসযুক্ত মাঠ ও কৃত্রিম টার্ফের উপর বাঁকানো স্টিক ও বলের সাহায্যে এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলার সময় প্রত্যেক দলের লক্ষ্য থাকে স্টিকের সাহায্যে বলকে চালিয়ে বিপক্ষের গোল সীমানায় প্রবেশ করিয়ে স্কোর করা। আইস হকি থেকে এটিকে পৃথক করার জন্য সচরাচর এ খেলাকে ফিল্ড হকি বলা হয়। হকি খেলার মাঠ আয়তাকার এবং তার মাপ ১০০× ৬০ গজ। হকি খেলায় ব্যবহূত বলের ওজন ও পরিধি যথাক্রমে ৫.৫ আউন্স ও ২৩.৫ সেমি। হকির উৎপত্তি নিয়ে মতভেদ থাকলেও ক্রীড়া গবেষকদের ধারণা, প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে গ্রিসে হকি খেলার উদ্ভব ঘটেছিল। তিন হাজার বছর পূর্বেকার মিসরের একটি পিরামিডেও হকি খেলার দৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। ১১২২ খ্রিস্টাব্দের ইউরোপের একটি দেয়াল চিত্রে এ সম্পর্কিত আরও প্রমাণ পাওয়া যায়। গ্রিসে এই খেলার উৎপত্তি ধরা হলেও হকি খেলা পূর্ণতা পায় ইংল্যান্ডে। ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত লন্ডনের উইম্বলডন হকি ক্লাব খেলাটিকে অনেক দিনের অগোছালো অবস্থা থেকে একটি নির্দিষ্ট রূপ ও মানদন্ড প্রদান করে। ১৮৯৫ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে ইংল্যান্ড ৫-০ গোলে আয়ারল্যান্ডকে পরাজিত করে। ১৯০৮ সালে হকি অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৪২ সালে ব্রাসেলসে গঠিত হয় ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল দ্য হকি। এটি হকির সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ১৯৫৮ সালে প্রথম বিশ্বকাপ হকির আয়োজন করা হয়। পাকিস্তান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, হল্যান্ড, ইংল্যান্ড, কোরিয়া, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশ হকি খেলায় যথেষ্ট পারদর্শী। হকির সঙ্গে বাংলাদেশের পরিচয় ঘটেছিল ব্রিটিশ আমলেই। ঢাকায় হকির সূচনা ঘটে ১৯০৫ সালের দিকে নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ’র পৃষ্ঠপোষকতায়। তবে খেলাটি তাদের পারিবারিক গন্ডিতেই সীমাবদ্ধ ছিল। এই অঞ্চলের জনসাধারণের কাছে হকি অপেক্ষা ফুটবল বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তা সত্ত্বেও কিছু ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক ও সংগঠকের নিরলস প্রচেষ্টায় খেলাটির বেশ অগ্রগতি সাধিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গুর্খা রেজিমেন্টের সদস্য ‘হকির যাদুকর’ ধ্যান চাঁদ ঢাকায় একটি প্রদর্শনী ম্যাচে খেলেন এবং এতে ব্যাপক দর্শক সমাগম হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ