শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

ভাববাদঃ 

ভাববাদী তত্ত্ব অনুসারে বস্তু জগতের সবকিছু পরমাত্মা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়, অর্থাৎ বস্তুজগতের সৃষ্টি ও ধ্বংস সহ সকল রকমের পরিবর্তন পরমাত্মা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অন্যদিকে প্রকৃতিবাদী তত্ত্ব অনুসারে বস্তু ও পদার্থ সহ যা কিছু আছে সবই বস্তু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও চালিত হয়, কারণ বস্তু ও শক্তি অভিন্ন। 
ভাববাদীরা মনে করেন বস্তু ও শক্তি দুটো ভিন্ন জিনিস। বস্তু জড় বিশেষ, কিন্তু শক্তি একটি অবস্তুগত জিনিস। শক্তি যখন বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তখনি বস্তু সক্রিয় হয়ে ওঠে। অন্যদিকে প্রকৃতিবাদ অনুসারে বস্তু ও শক্তি ভিন্ন কিছু নয়। শক্তি ও বস্তুর মধ্যে মূলত: কোন পার্থক্য নেই। যেমন- পানি, বরফ ও বাষ্প। এদের মধ্যে মূলত: কোন পার্থক্য নেই। যতটুকু পার্থক্য তা নিতান্তই অবস্থাগত এবং বাহ্যিক। এ জন্য এরা পরস্পর রূপান্তরযোগ্য। বস্তু এবং শক্তিও তাই। 

ভাববাদী তত্ত্ব অনুসারে জীবন জীব কোষের কোন গুণ বা ধর্ম নয়। পরমাত্মা থেকে আসা একটি অলৌকিক ও অবস্তুগত শক্তি, কিন্তু প্রকৃতিবাদী তত্ত্ব অনুসারে চেতনা বা মন পরমাত্মা থেকে আসা কোন অলৌকিক ও অবস্তুগত শক্তি নয়; বরং মস্তিস্ক কোষ থেকে আসা বস্তুগত একটি গুণ বা ধর্ম বিশেষ। তাই মস্তিষ্ক বিলীন হবার সাথে সাথেই মন বা চেতনার চির অবসান ঘটে। অন্যদিকে ভাববাদী তত্ত্ব অনুসারে মস্তিষ্ক কোষের অবসান হবার সাথে সাথে মন বা চেতনার চির অবসান ঘটে না, স্থানান্তরিত হয় মাত্র। 
ভাববাদী তত্ত্ব অনুসারে মানুষের দেহের মধ্যে আত্মা নামক অবস্তুগত একটি অবিনাশী অস্তিত্ব আছে। মানুষের দেহের অবসানের পরেও আত্মার অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকে। অন্যদিকে প্রকৃতিবাদী তত্ত্ব অনুসারে মানুষের দেহের অবসানের সাথে সাথে জীবন, মন, চেতনা, ইত্যাদির চির অবসান ঘটে। আত্মা বলে অবিনাশী ও চিরন্তন কিছু নেই। কাজেই আত্মার অমরত্বের কোন প্রশ্নই ওঠে না।