নামাজের গুরুত্বঃ
*********
আল্লাহ মানুষকে তার এবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করেছেন। শুধু মানুষ নয় ; মানুষ ও জ্বীন-উভয় জাতিকে আল্লাহ তার এবাদত তথা তার দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ (الذاريات :56)
অর্থাৎ আমি মানব ও জ্বীন জাতিকে একমাত্র আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।
ফলে তিনি মানুষের জন্য কিছু দৈহিক, আত্মিক ও আর্থিক এবাদতের প্রচলন করেছেন।
দৈহিক এবাদতের মাঝে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও মহান এবাদত হল সালাত বা নামাজ।
নামাজের গুরুত্ব হচ্ছে, যে ব্যক্তি নামাজের ফরজিয়তকে অস্বীকার করবে তারা অস্বীকারকারীদের অন্তর্ভূক্ত হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘বান্দা ও কুফরির মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামাজ ত্যাগ করা।’ (মুসলিম, মিশকাত) তাছাড়া আল্লাহ তাআলা কুরআনের ৮৩ জায়গায় নামাজের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। এজন্য ঈমান আনার পর নামাজ আদায় করা ফরজ।
>> আল্লাহ বলেন- قُل لِّعِبَادِيَ الَّذِينَ آمَنُواْ يُقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَيُنفِقُواْ مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلانِيَةً مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ يَوْمٌ لاَّ بَيْعٌ فِيهِ وَلاَ خِلاَلٌ অর্থাৎ ‘আমার বান্দাদেরকে বলে দিন যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তারা নামাজ কায়েম রাখুক এবং আমার দেয়া রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করুক ঐদিন আসার আগে, যেদিন কোন বেচা কেনা নেই এবং বন্ধুত্বও নেই।’ (সূরা ইবরাহিম : আয়াত ৩১)
>> আল্লাহ অন্যত্র বলেন- وَقُولُواْ لِلنَّاسِ حُسْناً وَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ অর্থাৎ ‘আর মানুষকে সৎ কথাবার্তা বলবে, নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে (সূরা বাক্বারাহ : আয়াত ৮৩)
>> অন্যত্র আল্লাহ ইরশাদ করেন, قُلْ أَمَرَ رَبِّي بِالْقِسْطِ وَأَقِيمُواْ وُجُوهَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ كَمَا بَدَأَكُمْ تَعُودُونَ অর্থাৎ ‘আপনি বলে দিনঃ আমার প্রতিপালক সুবিচারের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তোমরা প্রত্যেক সেজদার সময় স্বীয় মুখমন্ডল সোজা রাখ এবং তাঁকে খাঁটি আনুগত্যশীল হয়ে ডাক। তোমাদেরকে প্রথমে যেমন সৃষ্টি করেছেন, পুনর্বারও সৃজিত হবে। ’ (সূরা আরাফ : আয়াত ২৯)
>> নামাজের গুরুত্বের এত বেশি যে আল্লাহ ভিরুদের অন্যতম গুণ হচ্ছে নামাজ পড়া। আল্লাহ সূরা বাকারার শুরুতে মুত্তাক্বিদের পরিচয় দিতে ইরশাদ করেন, الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ অর্থাৎ `যারা অদৃশ্যের বিষয়গুলোতে ঈমান আনে এবং নামাজ কায়েম করে। আর আমি তাদেরকে যে রুজি দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।` (সূরা বাকারাহ : আয়াত ৩)
পরিশেষে...
নামাজের গুরুত্ব যে কত বেশি তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি হাদিস উল্লেখ করে শেষ করতে চাই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব হবে। যদি এ বিষয়ে ঠিক থাকে তবে সে মুক্তি পাবে এবং সফলকাম হবে। আর যদি তা ঠিক না থাকে তবে সে ব্যর্থ এবং ধংসপ্রাপ্ত। (তিরমিজি) আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে নামাজের গুরুত্ব বুঝে যথা সময়ে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।