শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

অফিসে এসে শুনতে পেলেন আপনার চাকরিটা চলে গিয়েছে। কী করবেন আপনি? রেগে যাবেন? কারণ জানতে চাইবেন? ভেঙে পড়বেন? নাকি মাথা নত করে বেরিয়ে যাবেন অফিস থেকে? শুধু আপনার সঙ্গেই নয়, এমনটা এর আগে হয়ে গিয়েছে আরও অনেকের সঙ্গেও। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভেঙে পড়েছেন। আবার কেউ মাথা উঁচু করে বেছে নিয়েছেন নিজের পথ। এগিয়ে গিয়েছেন সামনে। আর এমনই চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়া সফল মানুষগুলোকে নিয়েই এই প্রতিবেদন! ১. থমাস এডিসন এডিসন তখন প্রেসে রাতের শিফটে দায়িত্ব পালন করতেন। তবে কাজের পাশাপাশি চালাতেন নিজের নানারকম বৈজ্ঞানিক গবেষণাও। সবটা ঠিকঠাকই চলছিল। তবে ১৮৬৭ সালের সেই রাতটার কথা একটু আলাদা। সেই রাতে রাসায়নিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সময় হঠাৎ করে হাত থেকে সালফিউরিক এসিড পড়ে যায় এডিসনের আর সেটা গড়িয়ে যায় বসের টেবিলের নীচ অব্দি। ফলাফল? পরদিন সকালেই তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাকে কাজ থেকে। এর পরেও একদম ভেঙে না পড়ে নিজের গবেষণা চালিয়ে যান এডিসন আর দু’বছর পর নিজের প্রথম আবিষ্কারের পেটেন্ট নেন। ২. হিলারি ক্লিনটন ওয়েলসলি কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে বেরোবার পর আলাস্কার ভালডেজে স্যামন ক্যানারিতে কাজ নেন হিলারি ক্লিনটন। বারবার তাকে মাছের প্রক্রিয়াজাতকরণের নানা জায়গা থেকে বের করে নতুন কোনো জায়গায় বসানো হয়। কিন্তু কোনটাতেই টিকতে পারেননি তিনি। শেষ অব্দি মাছের গুনগত মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন হিলারি। ফলে পরদিন সকালেই বেরিয়ে আসতে হয় অফিস থেকে। আর তারপর? তারপরের গল্পটাতো সবারই জানা। আমেরিকার এই রাজনীতিবিদকে কে না চেনে? ৩. স্টিভ জবস অ্যাপলের উদ্ভাবক স্টিভ জবসকেও নিজের প্রতিষ্ঠান থেকেই তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তাও ৩০ বছর বয়সে। তবে হতাশ হয়ে বসে না থেকে নেক্সট নামে আরেকটি কম্পিউটার প্রতিষ্ঠান খোলেন জবস। যেটা পরবর্তীতে অ্যাপল কিনে নেয়। স্টিভ জবসকেও আবার স্বাগতম জানায়। ফলাফল হিসেবে সবাই পায় পিক্সার, আইফোন, আইপড আর আইপ্যাডের মতন কিছু অসামান্য আবিষ্কার। ৪. ওয়াল্ট ডিজনি ডিজনির প্রতিষ্ঠাতা ওয়াল্ট ডিজনিকে ১৯১৯ সালে তার তখনকার কর্মস্থল কানসাস সিটি স্টার নিউজপেপার থেকে বের করে দেওয়া হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল যে, তিনি যথেষ্ট কল্পনাশক্তি আর নতুন চিন্তার অধিকারী নন। তবে এটাই শেষ নয়। এরপর লাফ ও গ্রাম নামে একটি অ্যানিমেশন স্টুডিও খোলেন তিনি। যেটা একেবারেই দেউলিয়া হয়ে যায়। তবে গল্পটায় পরিবর্তন আসে যখন ডিজনি আর সেই সঙ্গে মিকি মাউস আর ডিজনিল্যান্ডের মতন কিছু চমৎকার জিনিস উপহার দিয়ে ২৩ বার অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড জিতে নেন এই মানুষটি। ৫. জে. কে রাওলিং লন্ডনের অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অফিসে কাজ করতেন জে. কে রাওলিং। তবে সেখানে বেশিরভাগটা সময় গল্পের নতুন ধারণা নিয়েই দিন কেটে যেত তার। অফিসের কম্পিউটারে একগাদা গল্প লিখে ভরিয়ে ফেলতেন তিনি। যেটা কিনা ধীরে ধীরে সহকর্মীদের অভিযোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং ফলাফল হিসেবে বরখাস্ত হন তিনি। তবে থেমে না গিয়ে আবার বই লেখায় মন দেন রাওলিং। আর সাফল্য পেয়ে যান খুব সহজেই। বর্তমানে তাকে পৃথিবীর সবচাইতে সফল লেখক মনে করা হয়, যার কাছে বৃটেনের রানির চাইতেও বেশি সম্পদ আছে। ৬. কর্নেল হারল্যান্ড স্যান্ডারস কেএফসির সাইনবোর্ডে হাস্যমুখে যে মানুষটির ছবি তাকে কে না চেনে? কিন্তু ৭৪ বছর বয়স অব্দি একের পর এক কেবল চাকরি থেকে বিতাড়িতই হয়েছিলেন এই মানুষটি। শুরুটা ১৯২০ সালে সাধারণ এক সেলসম্যানের চাকরিচ্যুত হওয়ার ঘটনা দিয়ে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাননি স্যান্ডারস। একের পর এক চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন নিজের রগচটা স্বভাবের জন্যে। তবে ১৯৬৪ সালে অবশেষে নিজের ফ্রাইড চিকেনকে নিয়ে সফল হন তিনি আর বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ মিলিয়ন ডলারও খুব সহজেই আয় করে নেন। ৭. অপরাহ উইনফ্রে ভাবছেন অপরাহ উইনফ্রের মতন মানুষকেও চাকরি থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছিল? হ্যাঁ! হয়েছিল। আর তার কারণ হিসেবে অপরাহের অতিরিক্ত আবেগকে দায়ী করা হয়। তবে পরবর্তীতে এই আবেগকে কাজে লাগিয়েই বিখ্যাত হয়ে ওঠেন অপরাহ আর নিজের দ্যা অপরাহ উইনফ্রে শোয়ের মাধ্যমে অর্জন করেন প্রচুর সম্মান আর সম্পদ। ৮. ম্যাডোনা ১৯৭৯ সালে সিটি পাংকের সঙ্গে পরিচয়ের আগে ম্যাডোনাকে যেতে হয়েছে প্রচণ্ড কষ্টকর একটা জীবনের ভিতর দিয়ে। কেরিয়ারের শুরুতে টাইমস স্কয়ারে ডানকিন ডোনাট নামের একটি দোকানে কাজ নেন তিনি। একদিন পরেই তাকে বরখাস্ত করা হয় সেখান থেকে ক্রেতার ওপর জেলি ছিটিয়ে দেওয়ার জন্যে। পরবর্তীতে আরও বেশকিছু কাজ হারান এই গায়িকা। তবে মনকে ভেঙে যেতে দেননি এই গায়িকা। আর তাই তো আজকে তিনি এতটা সফল।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ