মারেফতের দোহায় দিয়া বিভিন্ন জায়াগায় মানুষ ঢোল-তবলা দিয়া গান করে এটার শাস্তি কি? মারেফতে কি জায়েয আছে? থাকলে জানান তাড়াতাড়ি কোরআন হাদিস থেকে।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

গান বাজনার ব্যাপারে ইসলামের হুকুম:

আল্লাহ তায়ালা বলেন: “আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে, আর তারা ঐগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে।” [সূরা লুকমান ৩১: ৬ আয়াত]। বেশীর ভাগ তাফসীরকারকগণ এই আয়াতে ব্যবহৃত আরবী শব্দ ‍লাহওয়াল হাদীস বলতে গানকে বুঝিয়েছেন। সাহাবাদের ভেতর উলামা, ফুকাহা এবং মুফাসসীরিন হিসেবে পরিচিত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস এবং আব্দুল্লাহ ইবনে উমার(রা)-এই তিনজনেই এই আয়াতকে বাদ্য-বাজনা হারাম হওয়ার দলীল হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ইমাম হাসান বছরী র. বলেন: উহা গান ও বাদ্য শানে নাজিল হয়েছে।[তাফসীর ইবনে কাসীর ৩/৪৫১] আল্লাহ তায়ালা শয়তানকে সম্বোধন করে বলেন: “তোমার কন্ঠ দিয়ে তাদের মধ্যে যাকে পারো প্ররোচিত কর।” [সূরা ইসরা ১৭: ৬৪ আয়াত]

ইসলামে বাদ্য-বাজনা হারাম এবং যারা একে হালাল মনে করে তারা আল্লাহর চরম অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়ঃ

রাসূল (সা:) বলেছেন, “আমার উম্মাতের মাঝে এমন কিছু লোক আসবে যারা ব্যভিচার, পশম, মদ ও বাদ্য-যন্ত্রকে হালাল করে নিবে।” [সহীহ বুখারীঃ ৫৫৯০] এই সহীহ হাদীস পরিষ্কার বলে দিচ্ছে যে, বাদ্য-যন্ত্র হারাম। যারা হারামে লিপ্ত হবে তারা গুনাহগার হবে আর যারা হারামকে হালাল করে নিবে তারা কুফরিতে লিপ্ত হবে। আল্লাহ বলেন, “মুমিন নারী ও পুরুষকে এটি শোভা পায়না যে যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয় নির্ধারন করে দিবেন তখন তারা এর বিরোধিতা করবে। যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করবে সে অবশ্যই বড়ই ভুলের মধ্যে নিপতিত হবে।” [সূরা আল-আহযাবঃ ৩৬]

গান অন্তরে নিফাকী সৃষ্টি করে

ইবনে মাসউদ রা. বলেন: গান অন্তরে মুনাফেকী সৃষ্টি করে, যেমন ভাবে পানি ঘাস সৃষ্টি করে। যিকর অন্তরে ঈমান সৃষ্টি করে, যেমন পানি ফসল উৎপন্ন করে। (সনদটি সহীহ) ইবনুল কাইয়িম র. বলেন: যে ব্যক্তি সব সময় গান বাজনায় ব্যস্ত থাকে, তার অন্তরে মুনাফেকীও সৃষ্টি হবে, যদিও তার মধ্যে এর অনুভুতি আসবে না। যদি সে মুনাফেকীর হাকিকত বুঝতে পারত, তবে অব্শ্যই অন্তরে তার প্রতিফলন দেখতে পেত। কারণ কোন বান্দার অন্তরে কোন অবস্থাতেই গানের মহব্বত ও কোরআনের মহব্বত একত্রে সন্নিবেশিত হতে পারে না। তাদের একটি অন্যটিকে অবশ্যই দূর করে দিবে। মূল কথা হলো, গান, বাদ্য-বাজনা হলো শয়তানের বই। সুতরাং এই বই মহামহিম আল্লাহর কিতাবের সাথে এক অন্তরে সহাবস্থান করতে পারেনা। [ইঘাছাত আত লাহফান মিন মাসাইদ আশাইতান ১/২৪৮-২৫১]

তাই ইসলামী শরীয়তে গান-বাজনার কোন স্থান নেই। চাই তা মারেফতের ব্যানারেই হোক না কেন। এটা স্পষ্ট ধোঁকা ও  ইসলামকে নিয়ে তামাশা বৈ নয়। মহান আল্লাহ আমাদেরকে হিফাযত করুন। আমীন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ