শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

আইন অনুসারে প্রতিটি পূর্ণবয়স্ক সন্তান মা-বাবাকে প্রতিপালন করতে বাধ্য। সন্তান প্রতিপালনে অবাধ্য হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ধারায় আইনি পথে খোরপোশ আদায় করতে পারেন অক্ষম-অসহায় মা-বাবা। “মাতা-পিতার ভরণপোষণ আইন-২০১৩” প্রণীত হয়েছে। এই আইনের ৩(১) ধারা মতে, প্রত্যেক সন্তানকে তার পিতা-মাতার ভরণপোষণ নিশ্চিত করতে হবে। ৩(২) ধারা মতে, কোন পিতা-মাতার একাধিক সন্তান থাকলে সে ক্ষেত্রে সন্তানরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে তাদের পিতা-মাতার ভরণপোষণ নিশ্চিত করবে। ৩(৩) ধারা মতে, পিতা-মাতার ভরণপোষণ নিশ্চিত করবার ক্ষেত্রে প্রত্যেক সন্তানকে পিতা-মাতার একই সঙ্গে একই স্থানে বসবাস নিশ্চিত করতে হবে। ৩(৪) ধারা মতে, কোন সন্তান তার পিতা বা মাতাকে বা উভয়কে তার বা ক্ষেত্রমতে, তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে, কোন বৃদ্ধ নিবাস কিংবা অন্য কোথাও একত্রে কিংবা আলাদা আলাদাভাবে বসবাস করতে বাধ্য করবে না। ৩(৫) ধারা মতে, প্রত্যেক সন্তান তার পিতা এবং মাতার স্বাস্থ্য সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখবে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা ও পরিচর্যা করবে। ৩(৬) ধারা মতে, পিতা বা মাতা কিংবা উভয়, সন্তান হতে পৃথকভাবে বসবাস করলে সে ক্ষেত্রে প্রত্যেক সন্তানকে নিয়মিতভাবে তাদের বা ক্ষেত্রমতে, তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হবে। ৩(৭) ধারা মতে, কোন পিতা কিংবা মাতা বা উভয়ে, সন্তানদের সঙ্গে বসবাস না করে পৃথকভাবে বসবাস করলে, সে ক্ষেত্রে উক্ত পিতা বা মাতার প্রত্যেক সন্তান তাদের দৈনন্দিন আয়-রোজগার বা ক্ষেত্রমতে, মাসিক আয় বা বাৎসরিক আয় হতে যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ অর্থ পিতা বা মাতা বা ক্ষেত্রমতে, উভয়কে নিয়মিত প্রদান করবে। ৪(ক) ধারা মতে, প্রত্যেক সন্তান তাদের পিতার অবর্তমানে দাদা-দাদীকে এবং ৪(খ) মতে, মাতার অবর্তমানে নানা-নানীকে ধারা ৩ অনুযায়ী ভরণপোষণ প্রদানে বাধ্য থাকবে এই ভরণপোষণ পিতা-মাতার ভরণপোষণ হিসেবে গণ্য হবে। ৫ ধারায় পিতা-মাতার ভরণপোষণ না করবার দ- সম্পর্কে বর্ণনা আছে। ৫(১) ধারা মতে, কোন সন্তান কর্তৃক ধারা ৩-এর যে কোন উপধারার বিধান কিংবা ধারা ৪-এর বিধান লঙ্ঘন অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য অনূর্ধ্ব ৩ মাস কারাদ-ে দ-িত হবে। ৫(২) ধারা মতে, কোন সন্তানের স্ত্রী বা ক্ষেত্রমতে, স্বামী কিংবা পুত্র-কন্যা বা অন্য কোন নিকটাত্মীয় ব্যক্তি ৫(২ক) মতে, পিতা-মাতা বা দাদা-দাদীর ভরণপোষণ প্রদানে বাধা প্রদান করলে বা ৫(২খ) পিতা-মাতার বা দাদা-দাদীর বা নানা-নানী ভরণপোষণ প্রদানে অসহযোগিতা করলে তিনি উক্তরূপ অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করলে উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত দ-ে দ-িত হবে। ৬ ধারা মতে, এর অধীন অপরাধ আমলযোগ্য, জমিনযোগ্য ও আপোষযোগ্য হবে। ৭(১) ধারায় এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ ১ম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারযোগ্য হবে। ৭(২) ধারা মতে, কোন আদালত এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ সংশ্লিষ্ট সন্তানের পিতা বা মাতার লিখিত অভিযোগ ব্যতীত আমলে গ্রহণ করবে না। ৮(১) ধারায় আদালত এই আইনের অধীনে প্রাপ্ত অভিযোগ আপোষ নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেম্বার, কিংবা ক্ষেত্রমতে, সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভায় মেয়র বা কাউন্সিলর, কিংবা অন্য যে কোন উপযুক্ত ব্যক্তির নিকট প্রেরণ করতে পারবে। ৮(২) উপ-ধারা (১)-এর অধীনে কোন অভিযোগ আপোষ নিষ্পত্তির জন্য প্রেরিত হলে, সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, মেয়র, মেম্বার বা কাউন্সিলর উভয় পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান করে, তা নিষ্পত্তি করে এবং এইরূপে নিষ্পত্তিকৃত অভিযোগ উপযুক্ত আদালত কর্তৃক নিষ্পত্তিকৃত বলে গণ্য হবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ