শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

মুখের এই দুর্গন্ধ কেন হয়, তা নিয়ে বিজ্ঞানের গবেষণা বহুকাল যাবৎ চলে আসছে। সেসব গবেষণা থেকে সুনির্দিষ্টভাবে কয়েকটি কারণকে চিহ্নিত করা গেছে। সেগুলোর মধ্যে-

  • প্রতিবার খাবার গ্রহণে মুখের ভিতরে খাদ্য আবরণ দাঁতের ফাঁকে, মাড়ির ভিতর জমে থেকে ডেন্টাল প্লাক সৃষ্টি এবং তা থেকে মাড়ির প্রদাহ (পেরিওডেন্টাল ডিজিজ)।
  • মুখের যেকোনো ধরনের ঘা বা ক্ষত
  • আঁকাবাঁকা দাঁত থাকার কারণে খাদ্যকণা ও জীবাণুর অবস্থান।
  • দেহে সাধারণ রোগের কারণে মুখের ভিতরে ছত্রাক ও ফাঙ্গাস জাতীয় ঘা (ক্যানডিজিস)
  • মুখের ক্যান্সার।
  • ডেন্টাল সিস্ট বা টিউমার
  • দুর্ঘটনার কারণে ফ্রেকচার ও ক্ষত

তাছাড়া দেহের অন্যান্য রোগের কারণেও মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে। যেমন-

  • পেপটিক আলসার বা পরিপাকতন্ত্রের রোগ
  • লিভারের রোগ
  • গর্ভাবস্থা
  • কিডনি রোগ
  • রিউমেটিক বা বাতজনিত রোগ
  • ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র
  • হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ
  • গলা বা পাকস্থলীর ক্যান্সার
  • এইডস রোগ
  • হৃদরোগ
  • মানসিক রোগ
  • নাক, কান, গলার রোগ

সুতরাং মুখের স্থানীয়ভাবে কারণগুলো দূর করার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায় তবে দেহের অন্যান্য সাধারণ রোগের উপস্থিতির পরীক্ষাগুলো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করিয়ে নেয়া ভালো। দুর্গন্ধ বা দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস একটি বিরক্তিকর স্বাস্থ্য সমস্যা। প্রায়শই আক্রান্ত ব্যক্তি তার এমন অবস্থা সম্পর্কে খুব একটা অবগত থাকেন না। তবে সমস্যাটি আশেপাশে অবস্থানকারীদের। কেননা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার সময় যখন দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস বেরিয়ে আসে তখন গোটা পরিবেশকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে বাধ্য। শুধু পার্শ্বব্যক্তিই যে এর নেতিবাচক প্রভাবে বিরক্ত হন তা কিন্তু নয়। সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগী ব্যক্তিও নানা স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হন দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস ও এর আনুষঙ্গিক কারণে। তাই কেউ কেউ হরেক ব্র্যান্ডের মাউথওয়াস/ স্প্রে ইত্যাদি ব্যবহার করে বিরক্তিকর অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজেন, তাতে ফলাফল কতদূর পাওয়া যায় তা বলতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বসে নেই, একের পর এক চালিয়ে যাচ্ছেন নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তেমনি সম্প্রতি পরিচালিত সমীক্ষা শেষে একদল মার্কিন বিজ্ঞানী একটি নতুন তথ্য উপস্থাপন করেছেন। তাদের ভাষায় দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস দূরীকরণে এবং সুগন্ধী শ্বাসের জন্য মিন্ট বা পারফিউম-এর চেয়ে অধিক কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম ম্যাগনোলিয়া ফুল গাছের বাকল বা ছাল।

মুখের দুর্গন্ধ সম্পর্কে সবচেয়ে মজার তথ্যটি হলো যে, এটা ব্যক্তি নিজে বুঝতে পারেন না এবং অবলীলায় সবার সঙ্গে কথা বলে যান কিন্তু অন্যরা বুঝতে পারেন যারা তার কাছাকাছি থাকেন, এটাই মুখের দুর্গন্ধের একটি বড় সমস্যা। এতে সহকর্মী এবং বন্ধুবান্ধব ছিটকে যায়, কাছে ঘেষতে চায় না। অনেকেই বন্ধু ও প্রিয়জনের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হন এবং অপ্রিয় হয়ে যান। এ রকম অবস্থায় লাজলজ্জা ভুলে নিকটজন কাউকে জিজ্ঞেস করা ভালো যে, তার মুখে কোনো দুর্গন্ধ আছে কিনা অথবা কি তার সমস্যা। সবার কাছে লজ্জা পাওয়ার চাইতে এক বন্ধুর কাছে একটু লজ্জা পাওয়া খারাপ নয় নিশ্চয় অথবা নিজের মুখের সামনে হাত রেখে জোরে হা করে বাতাস বের করে নাকের দিকে ফিরিয়ে নিলে নিজেই বুঝতে পারা যাবে মুখে দুর্গন্ধ আছে কিনা। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বন্ধু স্ত্রী হলে স্বামী অথবা স্বামী হলে স্ত্রীর পরামর্শ নেয়া ভালো, সন্তান হলে মাকেও প্রশ্ন করা যায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ