“ সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু, অনলে পুড়িয়া গেল” এই বৈষ্ণবপদের রচিয়তা কে?

সঠিক উত্তর: জ্ঞানদাস
জ্ঞানদাস রচিত এটি পূর্বরাগের পদ। শ্রীকৃষ্ণের রূপদর্শন ও গুণকথা শ্রবণে রাধার মনে  কৃষ্ণের প্রতি অনুরাগ জন্মেছে। এখন নিবিড় সান্নিধ্য লাভের জন্য তাঁর মন উৎসুক। রূপদর্শন ও স্বরূপ সন্ধানের অপূর্বতা এই আলেখ্যে ধরা পড়েছে। বস্তুত রাধার মনে কৃষ্ণের প্রতি যে আসক্তি জন্মেছে তা শুধু সাদামাটা ভাবনার স্তরে থাকতে চাইছে না। গাঢ় প্রেমের রীতিই তাে এইরূপ। আরও অধিকবার দর্শন ও স্পর্শনের জন্য রাধার মন এখন ব্যাকুল। কৃষ্ণরূপ দর্শনে রাধার হৃদয়ের আর্তি মেটে না। দেহমনে নিঃসীম সুখের দিব্য অনুভূতি। আবার প্রতিক্ষণে কৃষ্ণকে দর্শন ও স্পর্শনের জন্য দেহমন আকুলিত। এদিকে কৃষ্ণের হাসিতে কত মধুর ধারা ঝরে পড়ে। প্রভুর মৃদু হাসি যেন প্রেমের সার বিশেষ। রাধা যখন গুরুজনদের মাঝখানে সঙ্গীদের সঙ্গে বিরাজ করেন তখন শ্যাম প্রসঙ্গ কানে আসামাত্র পুলকে তার দেহ পূর্ণ হয়। গুরুজন বা সঙ্গীদের কাছে যাতে ধরা না পড়েন, সেজন্য তা গােপন করবার বহুচেষ্টা করেন। কিন্তু আবেগের আতিশয্যে রাধার দুনয়ন থেকে অবিরল অশ্রুধারা ঝরতে থাকে। এর ফলে ঘরে উপস্থিত সব লােক কানাকানি করতে থাকে। কিন্তু কানুর প্রেমে দুঃসাহসিনী রাধার তাতে কিছু আসে যায় না। তিনি লজ্জার ঘরে আগুন দিয়েছেন। অর্থাৎ লজ্জা সংকোচ বিসর্জন দিয়েছেন।