হ্যাঁ যায়, ধরুন আপনি একটি দেশের রাজা। আপনার দেশে সম্পদ রয়েছে শুধুমাত্র ৫াট বালতি। আর আপনি আপনার দেশে ১ বছরে ১০ টাকা প্রিন্ট করেন। এখানে প্রতিটি বালতির মূল্য দুই টাকা। তাহলে দেশের মোট সম্পদের সাথে টাকার মূল্যটাও ভারসাম্য হলো। ঠিক পরের বছর আপনি আপনার দেশে ২০ টাকা প্রিন্ট করলেন। কিন্তু সম্পদ যা ছিলো তাই আছে অর্থাৎ ৫টি বালতিই রইল। যেহেতু দেশে নতুন কোনো সম্পদ বাড়েনি সেহেতু ৫টি বালতির কেনার জন্য বরাদ্দ হল ২০ টাকা অর্থাৎ প্রতিটি বালতিরদাম দ্বিগুণ হয়ে গেল।এভাবেই দেশের মোট সম্পদের তুলনায় অতিরিক্ত টাকা তৈরী করলে দ্রব্য মূল্য বেড়ে যায়। টাকার দাম বা ক্রয় ক্ষমতা কমে যায়। এটাই মুদ্রাস্ফীতি।
সরকার চাইলেই ইচ্ছেমত টাকা প্রিন্ট করতে পারবে না ।টাকা প্রিন্ট করার জন্য বিশ্ব ব্যাংক এর কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। আর সরকার যদিও বা অনুমতি না নিয়েই অবৈধ ভাবে টাকা প্রিন্ট করে তাহলেও সম্পদের পরিমান বাড়ে না কারন টাকা হচ্ছে শুধুমাত্র কোন পন্য আদান প্রদান এর মাধ্যম প্রাচীন কালে ছিল পন্য আদান প্রদান এর মাধ্যম যেমন
১- আপনার চাল আছে এখন আপনার দরকার মাছ সেক্ষেত্রে আপনাকে খুজে বের করতে এমন একজন ব্যক্তি যে কিনা চাল নিয়ে মাছ দিতে ইচ্ছুক
২- আপনার ১ টি গরু আছে এখন আপনার ১ টি জামা দরকার সেক্ষেত্রে আপনার গরু দিয়ে জামা নিতে হবে কিন্তু জামার দাম ত আর গরুর দামের সমান না
এসব সমস্যা নিরসনের জন্য তখনকার অর্থনীতিবীদ্গন এমন এক জিনিস বের করলেন যা এসব বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে আর বর্তমানে তাই টাকা বর্তমানে যাকে আমারা সম্পদ মনে করি কিন্তু আসলে টাকা ছাপা হলেই সম্পদের পরিমান বাড়বে না বরং দেশে তখন সবার কাছেই বেশি টাকা থাকবে কিন্তু সেই অনুপাতে ক্রয় করার মত পন্য থাকবে না তখন মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিবে। যেমন জিম্বাবুয়ে বা আফ্রিকার কিছু দেশে আছে যারা বস্তায় করে টাকা নিয়ে বাজার করতে যায় এবং বাজার নিয়ে আসে ব্যাগে করে তাহলে আশা করি বুঝতে পেরেছেন শুধু টাকা ইচ্ছে মত প্রিন্ট করলেই সপমদের পরিমান বেড়ে যায় না।
হ্যাঁ, সম্পদের মূল্যপরিমাণ বেড়ে যায়। কারণ, টাকা বিনিময়ের অর্থই হলো সম্পদ বিনিময়। চালের পরিবর্তে ডাল নেয়া, ধানের পরিবর্তে গম নেয়া, এসব কাজকে সহজ করেছে টাকা। টাকা মূলত সম্পদ বিনিময় ছাড়া আর কিছু নয়। ইচ্ছেমতো টাকা ছাপানো হলেও যেহেতু দেশের মোট সম্পদের পরিমাণ বাড়েনা, তাই সম্পদের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমেই অতিরিক্ত টাকার সমতা করা হবে। আবার যদি চিন্তা করেন যে- টাকা ছাপিয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বিদেশ থেকে সম্পদ কিনে আনবেন!! তাহলে? খেয়াল করে দেখুন, আপনি কিন্তু অন্য দেশে সরাসরি টাকা ব্যবহার করতে পারবেন না। দেশের কোনো এজেন্সী থেকে ভিন্ন মুদ্রাব্যবস্থায় পরিণত করতে হবে। কাজেই দেশের অতিরিক্ত টাকা কিন্তু দেশেই রয়ে গেল। আবার, আপনি টাকার উৎপাদন বাড়ালে বিশ্বব্যাংক-ও কিন্তু বিনিময় হার বাড়িয়ে দিবে! কাজেই সব মিলিয়ে দেশের অতিরিক্ত টাকা দেশেই থাকবে। এ অবস্থায় সম্পদের মূল্যবৃদ্ধি করা ছাড়া উপায় থাকবেনা।