টয়োটা নোয়া /টয়োটা প্রিমিও?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Emranhasmi

Call

ফিচারটি লিখেছেন মাহমুদ।


টয়োটা নোয়াহ : 

আমাদের দেশে মাইক্রোবাস পর্যায়ের যে গাড়িগুলো বেশি জনপ্রিয় তার মধ্যে টয়োটা নোয়াহ অন্যতম। ৮সীটের মাইক্রোবাসটি একটি এম ভি পি(মাল্টি পারপাস ভেহিকল)। জাপানী গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা মোটর কর্পোরেশন এই গাড়িটি বাজারে আনে টয়োটা লাইট-এইস নোয়াহর বদলে।এটি মূলত এশিয়ার বাজারের জন্য তৈরি। দেখতে অনেকটা টয়োটা ভক্সির মত। টয়োটা নোয়াহর প্রথম প্রজন্ম বাজারে আসে ২০০১ সালে। পরবর্তিতে এর দ্বিতীয় প্রজন্ম বাজারে আসে ২০০৭ সালে। বিভিন্ন পরিবর্তন সাধন করে বর্তমানে এর তৃতীয় প্রজন্মটি বাজারে আসে ২০১৪ সালে।

 

আমাদের দেশে নোয়াহ এর বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সম্বলিত যে গ্রেডগুলি দেখা যায় সেগুলো হচ্ছে নোয়াহ X,XL,XL Selection,Xsmart এবং G। এই গাড়ির গ্রেড অনুযায়ী যে কমফোর্ট লেভেল বৈশিষ্ট্য চোখে পড়বে তা হচ্ছে-

 

নোয়াহ X- এটি মাইক্রোবাসের বেসিক সুবিধা সম্বলিত নোয়াহ। এর মূল বৈশিষ্ট হচ্ছে এটি কী- স্টার্ট এবং কোন পাওয়ার ডোর নেই।


নোয়াহ XL- এটিও কী- স্টার্ট কিন্তু এর 1 পাওয়ার ডোর আছে।

নোয়াহ XL Selection- এখানে 2 পাওয়ার ডোর থাকলেও এটিও কী-স্টার্ট।

নোয়াহ X smart- এর প্রধান বৈশিস্ট হচ্ছে এটি পুশ স্টার্ট। 2 পাওয়ার ডোর এবং নিকেল হ্যান্ডেল।


নোয়াহ G- পুশ স্টার্ট,2 পাওয়ার ডোর,অরজিনাল টয়োটা এলয়, নিকেল হ্যান্ডেল এবং অবশ্যই ইন্টেরিয়র বেইজ।

২০১৪ তে নোয়াহ গাড়ি ৬টি শ্রেণী বাজারে ছাড়ে। এর মধ্যে ২টি হাইব্রিড গাড়ি যা হাইব্রিডG এবং হাইব্রিডX নামে পরিচিত। এই গাড়িগুলি ১৮০০ সিসি এবং এর ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন হচ্ছে 2ZR-FXE ও ফুয়েল ইকনমি ২৩.৩৮ কিমি/লিটার। হাইব্রিড ছাড়া অন্য ৪টি গ্রেড হচ্ছে C,G,X এবং XV । এগুলি ২০০০ সিসি এবং এর ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন হচ্ছে 3ZR-FXE। এই ইঞ্জিনের গড় ফুয়েল ইকোনমি হচ্ছে ১৬ কিমি/লিটার।


২০১৪সালের টয়োটা নোয়াহর ফিচারসুহের মধ্যে রয়েছে গাড়ির বাহিরটা আঁটসাঁট, বাক্সের মত দেখতে এবং জাঁকাল। বাহনটির  পেছনের ২টি স্লাইডিং দরজা একটি সুইচ টিপে খোলা যায়। উইন্ডশিল্ড আর সামনের দরজাটা ইভিটি কাট কাঁচ দিয়ে তৈরী যা সুর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুণী রশ্মি থেকে রক্ষা করে।টয়োটা নোয়াহর ভেতরটা বেশ প্রশস্ত এবং সামনের দরজায় রয়েছে পকেট ও বোতল রাখার জায়গা। আরো রয়েছে সেন্টার কনসোল ট্রে, পুট-ওনলি চার্জার, আরামদায়ক তাপ-নিয়ন্ত্রিত সীট এবং সীট দুর্গন্ধমুক্ত করার ক্ষমতা, বড় আসিস্ট গ্রিপ, চাইল্ড গ্রিপ, সীট ব্যাক পকেট, কেনাকাটার হুক, পেছনের সীটে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রনের ব্যাবস্থা, মুনরুফ এবং সানরুফ।

 

এছাড়া বিভিন্ন প্রতিরোধক ব্যবস্থা।যেমন-স্টিয়ারিং এসিস্‌টেড ভেহিকল কট্রোল, অ্যান্টি লক সিস্টেম, সয়ংক্রিয় টর্ক কন্ট্রোল, হিল স্টার্ট এসিস্‌ট, স্বয়ংক্রিয় হাই বিম ইত্যাদি। দুর্ঘটনা নিরাপত্তা বৈশিষ্টের মধ্যে আছে সেভেন-এসআরএস এয়ারব্যাগ পদ্ধতি, পথচারীর আঘাত কমানোর মত গঠন, , ইএলআর থ্রী- পয়েন্ট সিট বেল্ট, এবং আইসোফিক্স কমপ্যাটিবল বাচ্চাদের সীট।

 

৬,৭ জন সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের জন্য নোয়া গাড়ি হতে পারে একটি আদর্শ এম ভি পি। আরামদায়ক পরিবহনের জন্য আমাদের দেশে এর জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে।



টয়োটা প্রিমিও :

প্রথম বাজারে আসে ২০০১সালে। টয়োটার আরেকটি জনপ্রিয় মডেল টয়োটা করনা যা ১৯৫৭ সাল থেকে বাজারে প্রচলিত ছিলো। তারই জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হয় টয়োটা প্রিমিও নামক সেডানটি। এটি মূলত টয়োটার ক্যাম্রি ও করল্লা এই দুটি মডেলের সংমিশ্রণে তৈরী। গাড়ির ভালো কর্মদক্ষতা এবং জ্বালানী সাশ্রয় বৈশিষ্ট্য হওয়া সত্বেও এর দাম কিছুটা বেশি।ফলে সব শেণীর গাড়ি ক্রেতার কাছে  এর প্রাপ্যতা সহজ নয়।


প্রথম প্রজন্মঃ

এটি টি-২৪ নামে পরিচিত।প্রথম প্রজন্মের টয়োটা প্রিমিও তৈরী হয়েছিলো ২০০১ সালে। এর নির্মাণ অব্যাহত ছিলো ২০০৬ সাল পর্যন্ত। এটিতে ব্যবহার করা হয়েছিলো টি-প্লাটফর্ম। এর তিনটি ভার্শন তিনটি আলাদা ইঞ্জিনে পাওয়া যায় যা যথাক্রমে ১৫০০সিসি।১৮০০সিসি এবং ২০০০সিসি। শেষ মডেলটিতে সিভিটি ইঞ্জিন যুক্ত হয়েছে।

দ্বিতীয় প্রজন্মঃ

দ্বিতীয় প্রজন্মের টয়োটা প্রিমিও টি-২৬ নামে পরিচিত। ২০০৭ সালে এগুলো উৎপাদনে আসেএবং এর ডিজাইনে কিছুটা পরিবর্তনের পাশাপাশি এর ইঞ্জিনকে করা হয় আরো শক্তিশালী। এরও তিনটি ভার্শন ১৫০০সিসি,১৮০০ সিসি এবং ২০০০ সিসি তিন ধরনের ইঞ্জনে পাওয়া যায়।

বর্তমানে এর তৃতীয় প্রজন্ম বাজারে চলছে। টয়োটা প্রিমিও এর জ্বালাণী ধারন ক্ষমতা ৬০ লিটার। প্রতি লিটার জ্বালানি খরচে ১৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারে। এই গাড়িটির সর্বোচ্চ গতি হচ্ছে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার এবং ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতি অর্জন করতে এর সময় লাগে মাত্র ৯.৭ সেকেন্ড। এতে রয়েছে ৪-স্পিডের গিয়ারবক্স।

আমাদের দেশে সাধারণত ১৫০০ সিসির গাড়িই দেখা যায়। গাড়ির কমফোর্ট লেভেল বিবেচনা করে বিভিন্ন গ্রেড দেয়া হয়েছে। এই গ্রেডগুলি হচ্ছে F,FL,FL Prime Selection,FL Prime Green Selection এবং FEX প্যাকেজ।


F গ্রেডঃ এটি টয়োটা প্রিমিও এর বেসিক গাড়ি এবং কী স্টার্ট। এছাড়া অটো এসি,ব্যাক ক্যামেরা,পাওয়ার স্টিয়ারিং,সেন্ট্রাল লক ইত্যাদি দেখা যাবে।

FL গ্রেডঃ এটি পুশ স্টার্ট এবং এতে আরপিএম মিটার রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রায় আগের মতই।


FL Prime Selection গ্রেডঃ এটিও পুশ স্টার্ট। এতে আগের সুবিধা ছাড়া অতিরিক্ত হিসেবে আছে এইচ আই ডি লাইট, ফগ লাইট,চালক এবং যাত্রী উভয়ের জন্য এয়ার ব্যাগ ,বেইজ ইন্টেরিয়র ইত্যাদি।


FL Prime Green ও FEX প্যাকেজ পুশ স্টার্ট এবং ফিচার সমুহ প্রায় আগেরগুলোর মতই তবে FEX প্যাকেজ গ্রেড এ পাওয়ার ড্রাইভিং সীট রয়েছে।

দরদামঃ  বাংলাদেশে মাইলেজ,ফিচার,তৈরির সাল ইত্যাদির উপর নির্ভর করে রিকন্ডিশন্ড টয়োটা প্রিমিও এর দাম ২৩ লাখ থেকে ৩৩ লাখ টাকার মত হতে পারে।

টয়োটা গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ বাজারে সহজলভ্য এবং সার্ভিসিং করান সহজ বিধায় এবং এর সুন্দর ডিজাইন ও প্রশস্ত অভ্যন্তরীণ জায়গার কারণে অনেকের কাছেই টয়োটা প্রিমিও অধিক গ্রহণযোগ্য।



ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ