শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
F.Rahman

Call

তালমিছরির প্রস্তুত প্রনালী

তালমিছরি হলো প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি মিষ্টি। যাকে বলে আনপ্রসেসড সুগার তালমিছরিতে থাকে খাঁটি তালের রস। সেই তাল গুড় জ্বাল দেওয়া হয় একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এরপরে সেটিকে ঢালা হয় ট্রেতে বা কোনো পাত্রে | এরপরে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এই ট্রেগুলিকে চট দিয়ে ঢেকে রাখা হয় একটি বন্ধ ঘরে। সপ্তাহ খানেক পরে ওপরে ও নিচের অংশগুলি শুকিয়ে দানাতে পরিণত হয়,অর্থাত্‍ তালমিছরিতে পরিণত হয়। মাঝের লেয়ারটি তখনও নরম এবং জলীয় ভাব থাকে এবং সেটিকে বিশেষ উপায়ে আলাদা করে নেওয়া হয়। মিছরি তৈরি করার মরসুম মোটে চারটি। চৈত্রের মাঝামাঝি থেকে শ্রাবণের প্রথমার্দ্ধ,এই সময়েই বানানো হয় তালমিছরি। এভাবেই তৈরি হয় আমাদের অতিপরিচিত তালমিছরি।

তালমিছরি খাওয়ার উপকারিতা

> যাদের অ্যানিমিয়া রয়েছে তাদের জন্য তাল মিছরি খুবই উপকারি। কারণ তাল মিছরিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য তাল মিছরি খুব বেশি উপকারি। আয়রন রক্তের লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া হাড়ের সমস্যার সমাধান হলো তাল মিছরি।

> বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নানা রকম হাড়ের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। হাড় ক্ষয় হয় ও হাটু ব্যথা হয়ে থাকে। এ ধরণের নানা সমস্যার সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত। সে ক্ষেত্রেও তাল মিছরি খুবই উপকারি। কারণ প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে তাল মিছরিতে। যে কারণে তাল মিছরি হাড় ও দাঁত শক্ত করে তোলে ও হাড়ের নানা রকম সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

> মেয়েদের মেনুপজের পর হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে ও হাড় ভাঙার সমস্যা দেখা দেয়। এ হাড় ক্ষয় রোধ করতে নিয়মিত তাল মিছরি খাওয়া উচিত। বাচ্চাদেরও হাড় ও দাঁতের গঠন ঠিক রাখার জন্য তাল মিছরি খাওয়াতে হবে।

> তাল মিছরি সর্দি কাশি দূর করতে পারে। তাল মিছরির রস কাশি উপশম করে ও গলার শ্লেষ্মা নরম করে দিতে সাহায্য করে। ফলে গলায় খুসখুসের কাশির সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এক টুকরো তাল মিছরি মুখে নিয়ে চুষলে সর্দি ও কাশিতে অনেক আরাম পাবেন। কাশিতে গলায় ব্যথা শুরু হলে এক টুকরো তাল মিছরি, গোল মরিচ ও মধু দিয়ে পেস্ট বানিয়ে খেতে হবে। তবে গলা ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। এছাড়াও এক টুকরো তাল মিছরি, গোল মরিচ ও আমন্ডের পেস্ট গরম দুধের সঙ্গে প্রতিদিন রাতে খেলে নাকের শ্লেষ্মার সমস্যা অনেক দূর হয়ে যাবে।

> তাল মিছরি চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এ জন্য বাদাম, মৌরি, তাল মিছরি ও গোল মরিচের গুঁড়ো রোজ রাতে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে চোখের দৃষ্টি অনেক বেড়ে যাবে। এছাড়া কিডনির পাথর রোধ করতেও তাল মিছরি সাহায্য করে থাকে। পেঁয়াজের রসের সঙ্গে তাল মিছরি মিশিয়ে কিছুদিন খেলে কিছুদিনের মধ্যেই প্রসাবের সঙ্গে কিডনির পাথর বেরিয়ে যাবে। তাল মিছরি কিডনির জন্য খুবই উপকারি। তাই কিডনি সুরক্ষিত রাখতে তাল মিছরি খেতে পারেন।

> শুধু তাই নয়, তাল মিছরি পেটে ব্যথার উপশম করতে পারে। এছাড়াও এটি পেটের নানা রকম সমস্যা রোধ করতে ভীষণভাবে কার্যকরি। নিম পাতার সঙ্গে তাল মিছরি খেলে পেটের ব্যথা কমে যায়। এছাড়া ধনে গুঁড়ো ও তাল মিছরি মিশিয়ে দুধের সঙ্গে খেতে পারলে আমাশয় জাতীয় সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে। অনেক সময় নাক দিয়ে রক্ত পড়ে থাকে। সে ক্ষেত্রেও তাল মিছরি খুবই উপকারি। নাকের কাছে মিছরি গুঁড়ো ধরে গন্ধ নিলেও রক্তপাতের উপশম হবে।

> শুধু তাই নয়, মুখের আলসার রোধ করতে পারে তাল মিছরি। মুখের জ্বালা থেকে বাঁচতে তাল মিছরি ও এলাচ গুঁড়ো একসঙ্গে পেস্ট করে মুখের ভেতরে লাগাতে হবে। তবে মুখের আলসার অনেক কমে যাবে। অনেকেরই মাথা ব্যথার সমস্যা থাকে। চোখের জন্য মাথা ব্যথা খুবই সাধারণ একটি ব্যপার। এ জন্য আদার রসের সঙ্গে তাল মিছরি মিশিয়ে খেলে সাইনাসজনিত মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাল মিছরিতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার হজম শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে থাকে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ