১.ধরুন কেউ মহান আল্লাহ তায়ালাকে গালি দিল অথবা তার সাথে কাউকে শরীক করলো(নাউজুবিল্লাহ)।এরপর যদি সে বলে আমার এই গালি অথবা শরীক করার জন্য তুমি আমাকে অমুক শাস্তিটি দিবা এমন বিষয় কি কবুল হয় কোনো কারণে? আল্লাহ যদি ক্রোধবশত তার কামনাকৃত শাস্তিটি দিয়ে দেন? কিন্তু পরবর্তীতে সে যদি এই গালি দেওয়া অথবা এরূপ কাজের জন্য মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তাহলে তা ক্ষমা করা হবে কি না? ২.যেকোনো শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য কেউ যদি এভাবে বলে " তুমি যদি সত্যি আল্লাহ হও তাহলে আমাকে এই শাস্তি/(মানতের মাধ্যমে অথবা অন্য ভাবে নিজের জন্য ক্ষতিকর এমন জিনিস যা চাওয়া হয়েছিলো) তা দিবানা।" তবে কি তার শাস্তি মাফ হয়ে যায়?

পারলে রেফারেন্স সহ উত্তর দিন!


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

 

আল্লাহ তাআলাকে গালমন্দ করা সকল কুফরি অপেক্ষা বড় কুফরি, মূর্তিপূজকদের কুফরি অপেক্ষাও বড়। গালিদাতাকে হত্যা করা ওয়াজিব। এতে কোনো মুসলিমের দ্বিমত নেই। দ্বিমত শুধু তার তওবার ক্ষেত্রে, একমাত্র তওবা তাকে মৃত্যুদণ্ড থেকে অব্যাহতি দিতে পারে।

মহান আল্লাহ বলেন, “যারা আল্লাহ ও তার রাসুলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তো তাদেরকে ইহলোকে ও পরলোকে অভিশপ্ত করেন এবং তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।” (সুরা আহযাবঃ ৫৭)

আল্লাহ তাআলাকে কষ্ট দেয়ার অর্থ হল আল্লাহ তাআলার সাথে কুফরী করা, তার সাথে শরীক করা এবং তার ব্যাপারে এমন কথা বলা যা থেকে তিনি পবিত্র। যেমন মুশরিকরা আল্লাহ তাআলার শরীক সাব্যস্থ করে, ইয়াহূদীরা বলে: উযাইর আল্লাহ তাআলার ছেলে ও খ্রিস্টান সম্প্রদায় বলে ঈসা আল্লাহ তাআলার সন্তান ।

হাদীসে এসেছে, আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: আল্লাহ তাআলা বলেন: আদম সন্তান আমাকে কষ্ট দেয়। তারা যুগকে গালি দেয়, অথচ আমি যুগ। রাত-দিনের আবর্তন আমিই করে থাকি। (সহীহ বুখারী হা: ৪৮২৬, সহীহ মুসলিম হা: ২)।

সুতরাং যুগকে গালি দেয়া, প্রকৃতিকে দোষারোপ করা ঠিক নয়। কারণ প্রাকৃতিক কর্ম আল্লাহ তাআলার হাতে, কোন যুগ বা রাশিচক্রের নয়।

কেউ মহান আল্লাহ তাআলাকে গালি দিল অথবা তার সাথে কাউকে শরীক করলো এরপর যদি সে বলে আমার এই গালি অথবা শরীক করার জন্য তুমি আমাকে অমুক শাস্তিটি দিবা এমন বিষয় কবুল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মানুষ যখন কোনো সমস্যায় পড়ে, তখন তা থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট প্রার্থনা করে থাকে। আবার অনেক সময় দুঃখে পড়লে বা রাগ এবং ক্ষোভের সময় নিজের ব্যাপারেও বদ-দোয়া করে থাকে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিম উম্মাহকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন, যেন পরিবার-পরিজন এবং সম্পদের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে বদ-দোয়া না করে। কারণ এমন একটি সময় রয়েছে যখন দোয়া, বদ- দোয়া বা অভিশাপ; যা-ই করুন না কেন, তা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায়। যা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে তা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন।

হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা নিজেদের অভিশাপ দিও না। তোমরা তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের অভিশাপ দিও না; তোমরা তোমাদের চাকর-চাকরানিদের বদ- দোয়া কর না এবং তোমরা তোমাদের ধন- সম্পদের প্রতি বদ-দোয়া কর না। কেননা এমন একটি বিশেষ মুহূর্ত আছে যখন দোয়া (বা বদ-দোয়া) করলে তা কবুল হয়ে যায়। কাজেই তোমার ঐ বদ-দোয়া যেন (দোয়া কবুলের) ঐ মুহূর্তের সঙ্গে মিলে না যায়। (মুসলিম, আবু দাউদ)।

আল্লাহ যদি ক্রোধবশত তার কামনাকৃত শাস্তিটি দিয়ে দেন কিন্তু পরবর্তীতে সে যদি এই গালি দেওয়া অথবা এরূপ কাজের জন্য মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তাহলে তা ক্ষমা করা হবে। এবং যেকোনো শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য কেউ যদি তওবা করে তার শাস্তি মাফ হয়ে যায়।

মহান আল্লাহ বলেন, অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভূলবশত মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে, এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন; আল্লাহ মহাজ্ঞানী রহস্যবিদ। (নিসাঃ ১৭)

তবে এভাবে বলা যাবে না যে, তুমি যদি সত্যি আল্লাহ হও তাহলে আমাকে এই শাস্তি দিবানা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ