সাহাবায়ে কিরামগণ কি মহানবী সা.-এর সময়ে কুরআনের সকল আয়াতের মর্মার্থ যথাযথ ভাবে উপলব্ধি করতে পারতেন?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
mahfuz08

Call

সাহাবায়ে কিরাম রা. কুরআন মজীদের মুহ্‌কাম (সুস্পষ্ট) আয়াতের অর্থ জানতেন। তবে কোন কোন মুহ্‌কাম আয়াতের মর্মার্থ ও আনুসঙ্গিক বিষয় উপলব্ধি করতে না পেরে তারা রাসূলুল্লাহ সা.-কে জিজ্ঞাসা করতেন।

যেমনঃ "এতে রয়েছে মকামে ইব্রাহীমের মত প্রকৃষ্ট নিদর্শন। আর যে, লোক এর ভেতরে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা লাভ করেছে। আর এ ঘরের হজ্ব করা হলো মানুষের উপর আল্লাহর প্রাপ্য; যে লোকের সামর্থ রয়েছে এ পর্যন্ত পৌছার। আর যে লোক তা মানে না। আল্লাহ সারা বিশ্বের কোন কিছুরই পরোয়া করেন না। (Aali Imraan 3: 97)"
আয়াতটির অর্থ সুস্পষ্ট কিন্তু এর মর্মার্থ অনুধাবন করতে না পেরে সাহাবায়ে কিরাম রা. রাসূলুল্লাহ সা.-কে জিজ্ঞাসা করেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ! এ নির্দেশ কি প্রতি বছরের জন্য?" তিনি নিরব থাকেন।
আবার তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে নবী সা. বলেনঃ না।
নবী সা. বলেন, "যদি আমি বলতাম হা, তবে তা প্রতি বছর ওয়াজিব হয়ে যেত(তিরমযী ১ম খন্ড হজ্জ অধ্যায়)"।

আর মুতাশাবিহাত বা অস্পষ্ট আয়াতের মর্মার্থ না বুঝার কারণেও তারা রাসূলুল্লাহ সা.-কে জিজ্ঞাসা করতেন।
রাসূলুল্লাহ সা. আল্লাহর নির্দেশ(১৬:৪৪) অনুযায়ী কুরআনের বিভিন্ন সূরা ও আয়াত নাযিলের কারণ, নাসিখ(রহিতকারি) ও মানসূখ (রহিত) আয়াতেবং বিভিন্ন সূরা ও আয়াতসমূহের ক্রমনিন্যাস, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ বলে দিতেন।

সাওম পালনের প্রারম্বিক সময় সম্পর্কে কুরআন মজীদে আয়াত এসেছে।
"রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরন কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে। (Al-Baqara 2: 187)"

এর মর্মার্থ অনুধাবন করতে না পেরে আদী ইব্‌ন হাতিম রা. নামক সাহাবী কাল ও সাদা দু'টি সূতা বালিশের নীচে রেখে দিতেন এবং রাতে বার বার উঠে কাল সূতা থেকে সাদা সূতার পার্থক্য নার্ণয়ের চেষ্টা করতেন।
এরপরে রাসূলুল্লাহ সা.-এর নিকট আয়াতটির মর্মার্থ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেনঃ কার সূতার দ্বারা রাত এবং সাদা সূতার দ্বারা দিন বুঝানো হয়েছে।

সূত্রঃ
তাফসীরে মাযহারী, ১ খন্ড (জুন-১৯৯৭), ভূমিকা,
লেখকঃ কাযী মুহাম্মদ ছানাউল্লাহ পানীপথী (রাঃ)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ