মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকটি কোন প্রেক্ষাপটে রচিত?

সঠিক উত্তর: রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন
মুনীর চৌধুরী রচিত 'কবর' নাটকের পটভূমি ভাষা আন্দোলনে । বাংলাদেশর নাট্যসাহিত্যে মুনীর চৌধুরী (২৭ নবম্বর ১৯২৫, ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১) এক অবিস্মরণীয় নাম। অসাধারণ প্রতিভাধর এ নাট্যকার মৌলিক ও অনুবাদ নাটক দিয়ে বাংলা নাট্যসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি এ দেশের নবনাট্যের পথ দেখিয়েছেন। তার নাটকগুলো স্বদেশপ্রেম ও সমাজচেতনায় উদ্দীপ্ত। অল্পকাল ব্যবধানে দুটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পর দুনিয়াব্যাপী চিন্তা - চেতনায় পরিবর্তন ঘটে; এর অনিবার্য প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের শিল্প - সাহিত্যেও। শিক্ষিত - সচেতন মানুষ হিসেবে নাট্যকার মুনীর চৌধুরীও বিশ্বমননে স্নাত হয়েছিলেন। পৃথিবীখ্যাত নাট্যনির্মাতা ইবসেনের সামাজিক - বাস্তবতাবোধ, বার্নার্ড শর ব্যঙ্গাত্মক জীবন - জিজ্ঞাসা, পিরান্দেলো - ব্রেখট - বেকেটের প্রগাঢ় শিল্পলগ্নতা আর মন্মথ রায়ের ভাষার গভীরতা প্রভৃতি অগ্রসর ভাবনা - প্রবণতা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন তিনি। আর এ কারণেই বিষয় - কাঠামো আর মঞ্চে পরিবেশনের কলা - কৌশলের দিক থেকে তার নাটকগুলো স্বতন্ত্র মর্যাদায় অভিসিক্ত হয়েছে। মুনীর চৌধুরী ঐতিহাসিক কাহিনী নিয়ে অনেক নাটক ও একাঙ্কিকা লিখেছেন; তার মধ্যে ‘কবর’ অন্যতম। তার রক্তাক্ত প্রান্তর, চিঠি প্রভৃতি নাটক সবিশেষ সাফল্য লাভ করলেও জনমানুষের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ও প্রশংসা পেয়েছে ‘কবর’ নাটকটি। বিষয় - ভাবনা এবং পরিবেশন - শৈলীর কারণেই সম্ভবত এটির প্রচার ও প্রসার অসামান্য। ‘কবর’ গভীর জীবনবোধের আলোকে সজ্জিত একাঙ্গ নাটক। এ ধরনের নাটক অপেক্ষাকৃত আধুনিককালের সৃষ্টি। যেখানে সহজ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে অনায়াসে দেখে নেয়া যায় জীবনের রূপ - নিবিড়তা ও গন্ধ - গভীরতা। এখানে পাওয়া যায় সমকালের সহজ অনুভবের শিল্পঋদ্ধ জীবন নিষ্ঠ কথা।